পরে ঘটনাস্থল থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় ওই এনজিও কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক।
Published : 30 Apr 2024, 01:55 AM
কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীতে অপহৃত এক এনজিও কর্মীকে উদ্ধার অভিযানের সময় একটি ‘সন্ত্রাসী চক্রের’ দলের সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলিতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেনে এক র্যাব সদস্যসহ তিনজন।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার এ অভিযানের সময় ওই সন্ত্রাসী চক্রের প্রধান মোহাম্মদ ফরহাদ ওরফে শেরে ফরহাদকে একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করার তথ্য দিয়েছে পুলিশের বিশেষ এ ইউনিট।
র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের মুরাপাড়ায় তারা এ অভিযান চালান।
নিহত কৃষক মোহাম্মদ বায়াতুল্লাহ (৪৫) ভারুয়াখালী ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ার মৃত ছৈয়দুল হকের ছেলে।
আহতরা হলেন- র্যাবের এএসআই মোহাম্মদ সরওয়ার, ভারুয়াখালী ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে শফি উল্লাহ (৪০) ও একই এলাকার বদরুল হক মিয়ার ছেলে মো. সায়মান (২০)।
গ্রেপ্তার শেরে ফরহাদ ভারুয়াখালী ইউনিয়নের ঘোনার পাড়ার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফরহাদের নেতৃত্বে ভারুয়াখালীতে একটি ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও জবরদখল সহ নানা অভিযোগে ৭টির বেশি মামলা রয়েছে।
অপহরণের শিকার মো. মাসুদ চৌধুরী (৩৫) বেসরকারি সংস্থা প্রত্যাশীর ঈদগাঁও শাখার মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
র্যাব কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সোমবার বিকালে মুরাপাড়ায় এনজিও কর্মকর্তা মাসুদ চৌধুরী ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির টাকা সংগ্রহ করতে যান। এ সময় মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে ৫/৬ জনের একদল সন্ত্রাসী তাকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে মুরাপাড়া সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় জিন্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে।
“সন্ধ্যায় ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর র্যাবের একটি দল অপহৃত এনজিও কর্মকর্তাকে উদ্ধারে অভিযান চালায়। অভিযানে র্যাবসদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও অংশগ্রহণ করে। এক পর্যায়ে পাহাড়ী এলাকায় সন্ত্রাসীদের গোপন আস্তানাটি ঘিরে ফেললে র্যাবসদস্যদের লক্ষ্য করে অতর্কিত এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে র্যাবসদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে।”
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, “সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে র্যাবের এক সদস্যসহ তিনজন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।”
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গোলাগুলির ঘটনার খবরে র্যাবের অতিরিক্ত সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে পাহাড়ি এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ ফরহাদকে একটি শটগানসহ গ্রেপ্তার করা হয়। সে এখন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পরে ঘটনাস্থল থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় এনজিও কর্মকর্তা মাসুদ চৌধুরীকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান তিনি।
ওই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ঘটনায় জড়িত অন্য সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।