রাঙামাটিতে ‘চাঁদার টোকেন না থাকায়’ অটোরিকশা পোড়ানোর অভিযোগ

বিভিন্ন সময়ে এই পথে চাঁদার অভিযোগ করেছেন সড়ক ও নৌ-পথে চলাচলকারী যানবাহন শ্রমিকরা।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2022, 10:51 AM
Updated : 16 Sept 2022, 10:51 AM

রাঙামাটি সদর উপজেলায় ‘চাঁদার টোকেন না থাকায়’ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন চালক।

রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কে উপজেলার আগর বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে কোতোয়ালী থানার ওসি কবির হোসেন জানান।

অটোরিকশার চালক রাঙামাটি শহরের মসজিদ কলোনির বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন বলেন, “দুইজন যাত্রী নিয়ে আমি রাঙামাটি শহর থেকে কাপ্তাই যাচ্ছিলাম। আগর বাগান এলাকায় পাহাড়ি একটি সংগঠনের চার-পাঁচজন সদস্য গাড়ি থামিয়ে মাসিক টোকেন আছে কি-না জানতে চায়। 

“টোকেন না পেয়ে গুলি করতে চাইলে আমি না মারার জন্য কাকুতি-মিনতি করি। তাদেরকে এক হাজার টাকা দিতে চাইলেও তারা তা না শুনে আমাকে মারধর করে গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে চলে যায়।”

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাপ্তাই স্টেশনের স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে গাড়িটি প্রায় পুড়ে গেছে। ইঞ্জিনটি হয়ত সক্রিয় থাকতেও পারে।”

কোতোয়ালী থানার ওসি কবির হোসেন আরও বলেন, “বিষয়টি শুনে পুলিশ সেখানে গেছে। সবার সঙ্গে কথা বলে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে রাঙামাটি অটোরিকশা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই পাহাড়ি একটি সশস্ত্র সংগঠন রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কে চলাচলকারী অটোরিকশার কাছে বাড়তি চাঁদা দাবি ও টোকেন রাখার নির্দেশ দিচ্ছে।”

“সড়কটিতে যান চলাচল খুব বেশি না হওয়ায় চালকদের পক্ষে দিনের রোজগার দিয়ে সংসার চালানোই দায়। তাই তাদের নির্দেশনা মানা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এই কারণে কয়েকদিন আগে সংগঠনটির সদস্যরা ছয়জন চালককে গাড়িসহ অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সেনা অভিযানের মুখে তাদের ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।”

অটোরিকশা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, “আজও একটি অটোরিকশা পুড়িয়ে দিয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা এই সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তীতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

তবে পাহাড়ের কোন আঞ্চলিক সংগঠন এমনটি করছে- জানতে চাইলে এড়িয়ে যান মিজানুর। 

নয়নাভিরাম কাপ্তাই হ্রদের পাড় ঘেঁষে বছর কয়েক আগে নির্মিত ১৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কটিকে দেশের নতুন পর্যটন ‘হাব’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সড়কের একপাশে হ্রদ আর অন্যপাশে সবুজ পাহাড়ের কারণে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠা এই সড়কটি পাশে একের পর এক রিসোর্ট গড়ে উঠছে। রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও এই সড়কে অবস্থিত। বিভিন্ন সময়ে এই পথে চাঁদার অভিযোগ করেছেন সড়ক ও নৌ-পথে চলাচলকারী যানবাহন শ্রমিকরা।