Published : 01 May 2025, 07:09 PM
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরতে মধ্যরাত থেকেই নেমেছেন জেলেরা। দীর্ঘ সময় নদীতে বিচরণ করেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ইলিশ না পেলেও জেলেদের হতাশা কেটেছে পোয়া, শিলন, ভেলে, চেওয়া, ছোট চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে।
বৃহস্পতিবার চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জেলেদের কর্মচাঞ্চল্যতা। কেউ মাছ ধরার জন্য নদীতে যাচ্ছেন, কেউবা জাল ঠিকঠাক করছেন। কেউ কেউ ধরে আনা মাছ পাড়েই বিক্রি করছেন।
ইলিশের পোনা, জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এই সময় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলেরা দলবলে নৌকা-ট্রলার -জাল নিয়ে নেমে যান নদীতে।
জেলে সুমন দেওয়ান বলেন, তিনি রাত ৩টায় নদীতে নেমেছেন। নৌকায় ছিলেন তিনিসহ তিন জেলে। সকাল ১০টায় মাছ ধরা শেষে পাড়ে এসেছেন। ইলিশের দেখা না পেলেও জালে এসেছে পোয়াসহ ছোট প্রজাতির মাছ। বিক্রি করেছেন ৪ হাজার ৮০০ টাকা।
জেলে মিজানুর রহমানের দাবি, তিনি ভোরে নামেন নদীতে, উঠেছেন বেলা ১১টার দিকে। ছোট আকারের কয়েকটি ইলিশ ও পোয়া মাছ পেয়েছেন।
ইলিশ না পেলেও ছোট মাছের সঙ্গে আট কেজি ওজনের একটি পাঙাশ মাছ পেয়েছেন জেলে আরিফুর রহমান ঢালী।
তিনি বলেন, চারজন মিলে নৌকা নিয়ে ভোরে নদীতে নেমেছিলেন, উঠেছেন বেলা ১১টার দিকে। পাঙাশসহ সব মাছ বিক্রি করেছেন ১৪ হাজার টাকায়। নিষেধাজ্ঞা শেষে যে পরিমাণ মাছ পাওয়ার কথা ছিল, সেই পরিমাণ মাছ জালে উঠেনি।
শহরের লঞ্চঘাট এলাকার জেলে বাচ্চু দেওয়ান বলেন, ভোরে নেমেছেন নদীতে। ইলিশ পাওয়া যায়নি, তবে পোয়া মাছ পেয়েছেন। তিনি বলেন, মাছ বিক্রি করে ২ হাজার টাকা পেয়েছেন।
এদিকে, চাঁদপুরের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছঘাট সকাল থেকেই ছিল অনেকটাই ফাঁকা। বেশ কয়েকটি আড়তে দেখা গেছে দেশীয় প্রজাতির পোয়া, বাটা, চিংড়িসহ কিছু মাছ।
চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, ইলিশ পরিভ্রমণশীল মাছ। সাগর থেকে নদীতে আসে, আবার সাগরে চলে যায়। আশা করি, জেলেরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবে। শুধু ইলিশ নয়, নদীর সব ধরনের মাছই মূল্যবান এবং জেলেরা তা পাচ্ছেনও।