Published : 30 Apr 2025, 07:39 PM
ময়মনসিংহ নগরীর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানে ‘ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের’ মুক্তমঞ্চ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ওই উদ্যানের ভেতরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বেশ কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদের সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চটিও গুঁড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন কবি-সাহিত্যিকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার অভিযানের শুরুতেই কাচারীঘাট এলাকায় হিমু আড্ডার খানিকটা সামনে গড়ে ওঠা ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের অসম্পন্ন একতলা ভবন ভাঙার চেষ্টা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেটি ভাঙতে ব্যর্থ হয়ে পাশেই স্থাপিত মুক্তমঞ্চটি ভাঙা হয়।
পরে বৈশাখী মঞ্চের উল্টো দিকে গড়ে ওঠা বিজয়ী পিঠা বাড়ি নামে একটি স্থাপনা উচ্ছেদসহ রাস্তার পাশে আরও কয়েকটি দোকান ও স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ করা হয়।
মুক্তমঞ্চ ভাঙার খবর পেয়ে কবি-সাহিত্যিকরা সেখানে ছুটে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম, সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী হাকিম কে এম রাফসান রাব্বির সঙ্গে তর্কে জড়ান।
কবি শামীম আশরাফ বলেন, “৪৩ বছর ধরে পার্কের একটু জায়গায় আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করে আসছি। প্রতি শুক্রবার সেখানে বীক্ষণের আসর বসে। শিল্প-সাহিত্যের নগরীর এই স্থানে কবি নির্মলেন্দু গুণ, হেলাল হাফিজ, শামসুল ফয়েজসহ অসংখ্য গুণী মানুষের পদচারণা রয়েছে।
“আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছি।”
ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, “শতশত একর জমি প্রশাসন এবং প্রভাবশালীরা নানাভাবে বেদখল করে রেখেছে। সেখানে কারো চোখ পড়ে না।
“সামান্য একটু জায়গায় সাহিত্য মঞ্চটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। এতে আমাদের মনে দাগ কেটেছে। শুক্রবারের আগে মঞ্চটি প্রশাসন তৈরি করে না দিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বায়ক আব্দুল্লাহ আল নাকিব বলেন, “মুক্তমঞ্চ থেকে ১০০ গজ দূরে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বাণিজ্য মেলা নামে একটি স্থাপনা গত ছয় মাস ধরে গড়ে উঠেছে। সেটি প্রশাসন না সরিয়ে কবি-সাহিত্যিকদের সাহিত্য চার্চায় আঘাত হেনেছে।”
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আল মাজিদ বলেন, “এসব স্থাপনার কোনো বৈধতা ছিল না। এগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিকদের অভিযোগ ছিল। তাই এগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। নগরবাসী এমন উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে।”
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।