কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মার্চ থেকে নভেম্বর এই হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেন।
Published : 17 Mar 2025, 04:04 PM
ফরিদপুরে হিমাগারে আলু রাখা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। দূর-দূরান্ত থেকে এসে দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করেও আলু রাখতে পাড়ছেন না তারা।
ফরিদপুর শহরতলীর রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে হিমাগার ফটকের সামনে ও আশপাশের সড়কে পাঁচ-ছয়দিন ধরে অপেক্ষা করেও আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন অনেকে। তাদের শঙ্কা, দীর্ঘ সময়ে প্রচণ্ড গরমে নষ্ট হতে পারে গাড়িতে রাখা আলু।
নিয়ম অনুযায়ী হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতিবছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বুকিং দিতে হয়।
তবে এবার বুকিং দিয়েও আলু রাখতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী।
ফরিদপুর হিমাগারে আলু রাখার জন্য ঠাকুরগাঁও থেকে এসেছে সেলিম মোল্লা।
তিনি জানালেন, গত পাঁচদিন আগে ১৩ টন আলু নিয়ে ফরিদপুরে এসেছেন তিনি।
অপেক্ষা করতে করতে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ভয়ে আছেন এই ভেবে যে, ট্রাকে রাখা আলু প্রচণ্ড গরমে না পচন ধরে যায়।
ফরিদপুর হিমাগারের ব্যবস্থাপক রুস্তম মোল্লা বলেন, সদর উপজেলার গোয়ালচামট এলাকায় ১৯৯৫ সালে ব্যক্তি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয় এ হিমাগারটি।
কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানে আলু সংরক্ষণ করেন।
এছাড়া ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই অল্প দিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করেন। সুবিধামত সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।
তিনি বলেন, হিমাগারটির ধারণক্ষমতা রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার বস্তা। প্রতি বস্তায় ৬০ কেজি করে আলু রাখতে হয়।
নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবসায়ীরা বস্তা প্রতি ৪০৫ টাকা হারে ভাড়া দেন।
মৌসুমের শুরুতে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদা, মাগুরা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, দিনাজপুর, ও রাজশাহী অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা আলু এনে এই হিমাগারে সংরক্ষণ করে রাখেন।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, অধিক ফলন ও একইসঙ্গে সবাই আলু নিয়ে আসার কারণে এ বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে।
ইতোমধ্যে তারা ৬০ হাজারের এর বেশি বস্তা আলু হিমাগারে প্রবেশ করিয়েছেন।
অপেক্ষায় বিড়ম্বনা কথা স্বীকার করে রুস্তম মোল্লা বলেন, “আমাদের আন লোডের শ্রমিক সংখ্যা কম, যে কারণে দূর-দূর্দান্ত থেকে আসার ট্রাকগুলো থেকে আমরা পর্যাপ্ত আলু রাখতে পারছি না।
“তবে আশা করছি, আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে অপেক্ষায় থাকা ট্রাকগুলোর আলু আমরা সংরক্ষণ করতে পারব।”
হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে আসা লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেউ তিনদিন, কেউ বা পাঁচদিন ধরে ট্রাক্টর, ভটভটি, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে আলু নিয়ে এসেছেন হিমাগারে রাখার জন্য।
এরাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে অবস্থিত এ হিমাগার ঘুরে দেখা যায়, যানবাহন ভরে আলু নিয়ে এসে দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ী।
আগতদের অধিকাংশই উত্তরবঙ্গ জেলাগুলো থেকে আসা।