টিলা ধসে দুই পরিবারের ছয়জন আটকা পড়েছিলেন।
Published : 10 Jun 2024, 01:58 PM
সিলেটে ভারি বৃষ্টিতে টিলা ধসে ঘরে আটকা পড়া স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার বেলা ১টার দিকে সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের চামেলীবাগ এলাকার ২ নম্বর রোডের ৮৯ নম্বর বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে সিলেট শাহপরাণ থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী জানান।
মৃতরা হলেন-ওই এলাকার মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে করিম উদ্দিন (৩৫), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রোজি (২৬) এবং তাদের ১৫ মাস বয়সী ছেলে নাফজি তানিম।
তাদের লাশ উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার ভোর ৬টার দিকে টিলা ধসের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের কর্মীরা আটকা পড়াদের উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, “টিলা ধসে উদ্ধার হওয়া তিনজন মারা গেছেন। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রী ও ১৫ মাস বয়সের একটি ছেলে রয়েছে।"
সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি দল উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন।
ঘটনার পর সিলেট শাহপরাণ থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী বলেন, “পাহাড় ধসের খবর পেয়ে সকাল ৭টার দিকে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। ভারি বৃষ্টির কারণে টিলার মাটি ধসে একটি আধাপাকা ঘরের ওপরে পড়েছে। ঘরটি টিলার নিচেই ছিল।”
ওই বাসায় দুটি পরিবার থাকে জানিয়ে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ভূমি ধসে ঘরের নিচে দুই পরিবারের ছয়জন আটকা পড়েছিলেন। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আমরা এসে একটি পরিবারের তিনজনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছি।”
বৃষ্টির কারণে উদ্ধার আভিযান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম।
সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলছিলেন, “ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট, পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের ৩০ জন উদ্ধারকর্মী উদ্ধারে কাজ করছে। উদ্ধার কাজ আরও জোরদার করার জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
“সিলেটে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। বর্ষাকলে এখানে টিলা ধসের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।”
এই সময়ে টিলার নিচে বা ওপরে কাউকে না থাকার অনুরোধ জানিয়ে এ সময় মেয়র বলেন, “অপরিকল্পিতভাবে টিলা কাটার কারণে ধসের ঘটনা ঘটছে। তাই টিলা কাটা এবং টিলার আশেপাশে থাকা থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।
“আমি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো। বিষয়টি নিয়ে নগর ভবনে জরুরি সভার আহ্বান করেছি এবং জনসচেনতা বাড়াতে ঝঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং করবে সিলেট সিটি করপোরেশন।”