Published : 01 May 2025, 09:56 PM
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দিচ্ছেন মাইক ওয়াল্টজ। গণমাধ্যমের খবরে একথা বলা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে ওয়াল্টজই প্রথম তার পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।
জাতীয় নিরাপত্তার বিভিন্ন বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করে এসেছেন ওয়াল্টজ।
কিন্তু সরকারি কার্যকলাপ নিয়ে অনিরাপদ পদ্ধতিতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগাযোগের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ওয়াল্টজ তার মেয়াদে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছেন।
ট্রাম্পের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভুল করে একটি ম্যাসেজিং গ্রুপ চ্যাটে ইয়েমেনের যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রকাশ করে ফেলেছিলেন। সেই গ্রুপে একজন সাংবাদিকও ছিলেন।
বিবিসি জানায়, ম্যাসেজিং সিগনাল গ্রুপ চ্যাটটি তৈরি করেছিলেন ওয়াল্টজ। তাতে অসাবধানতাবশত যুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন ওই সাংবাদিক।
পরে মেসেজিং গ্রুপে কর্মকর্তাদের বার্তা–আদান প্রদানকালে ইয়েমেন যুদ্ধ পরিকল্পনা ফাঁসের ঘটনা ঘটে। গতমাসে এই ঘটনার দায় নেন মাইক ওয়াল্টজ।
ওয়াল্টজের উপপ্রধান কর্মকর্তা অ্যালেক্স নেলসনও তার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ১০০ তম দিন উদযাপনের পরপরই দুই কর্মকর্তার এই সরে দাঁড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা শিবিরকে নাড়িয়ে দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আটলান্টিক ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গ গত ১৩ মার্চ অপ্রত্যাশিতভাবে ম্যাসেজিং অ্যাপ সিগনালে ইনক্রিপ্ট করা ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’
নামের একটি চ্যাট গ্রুপে আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
এই গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ তার ডেপুটি অ্যালেক্স ওয়াংকে হুতিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ সমন্বয় করতে ‘টাইগার টিম’ তৈরি করার কাজ দিয়েছিলেন।
চ্যাট গ্রুপটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সিআইএ এর পরিচালক জন র্যাটক্লিফ, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড, অর্থমন্ত্রী স্কট ব্যাসেন্ট, হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের কর্মকর্তারাও যুক্ত ছিলেন।
ইয়েমেনের হুতিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এই কর্মকরতারা চ্যাট গ্রুপে সামরিক হামলার পরিকল্পনার গোপন তথ্য নিয়ে আলোচনা করেন।
জেফরি গোল্ডবার্গ বলেছেন, তিনি মাইক ওয়াল্টজ এর কাছ থেকে এই চ্যাট গ্রুপে যুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। পরে ওয়াল্টজ এই অসাবধানতার দায় নেন।
তবে তথ্য ফাঁস হওয়ার পর প্রথমদিকে ট্রাম্প ও তার গোয়েন্দা প্রধানরা কোনও গোপন তথ্য ফাঁসের কথা অস্বীকার করেছিলেন এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টিও লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।
ওয়াল্টজের পক্ষ সমর্থনে সে সময় কথা বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে পরে ডেমোক্র্যাটরাসহ কিছু রিপাবলিকানও ঘটনাটি তদন্তের আহ্বান জানান এবং কয়েকজন আইনপ্রণেতা এ ঘটনাকে নিরাপত্তায় বড় ধরনের ফাটল বলেই বর্ণনা করেন।