Published : 10 Jul 2024, 05:28 PM
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
এ সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে ‘মেধা না কোটা, কোটা কোটা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘কোটা ব্যবস্থার অবসান, ছাত্র সমাজের জয়গান’, ‘নারী যেখানে অগ্রসর, কোটা সেখানে হাস্যকর’- স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এ কর্মসূচি চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাগরিকা খাতুন বলেন, “আমরা কোটার সম্পূর্ণ বিরোধী নই, আমরা সংস্কার চাই। বৈষম্যমূলক কোটার নামে মেধাকে পিষে মারার এই আয়োজন থামাতে চাই। ন্যায্যতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখা যেতে পারে, এর বেশি নয়।”
তিনি বলেন, “কোটা বহালে হাই কোর্টের রায়ে আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। সেটি কোর্টের বিষয়। এর সঙ্গে আমাদের আন্দোলনের সম্পর্ক নেই। আমাদের আন্দোলন নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে। তাদের কাছে আমাদের দাবি, মেধা বাঁচান।”
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ রহমান বলেন, “নানামুখী কোটা দিয়ে মেধাকে নিষ্পেষণ করা হচ্ছে। লেখাপড়া শেষ করে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে। এর জন্য মোটা দাগে এই বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা দায়ী। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় আমরা এই বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার চাই।“
তিনি বলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ এই কোটার জন্য অন্ধকারে, আমরা আলো নিয়েই ক্লাসে ফিরব। এর আগে সড়ক ছাড়বো না, আন্দোলন চলবে।”
সড়কে বসে বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে শিক্ষার্থীরা যখন তাদের দাবি জানাচ্ছিলেন, তখন ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। কয়েক কিলোমিটার গাড়ির সারি দেখা গেছে। এ সময় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
অবশ্য অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়নি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় এ বিষয়ে দুই শিক্ষার্থীর দায়ের করা পৃথক আপিলের শুনানি করেন আপিল বিভাগ।
শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পূর্ণ আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একইসাথে সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরতে বলেছেন।
গত ৫ জুন নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট।
কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই রায় দেওয়া হয়েছিল। এর প্রতিবাদ জানিয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে বুধবার দশম দিনের মত কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।