শুক্রবার পীরের ভক্তদের ‘লংমার্চ কর্মসূচি’ এবং প্রতিপক্ষের ‘প্রতিরোধের’ ঘোষণায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছে।
Published : 29 Nov 2024, 08:00 PM
শেরপুরের মুর্শিদপুর দোজা পীরের ভক্তরা দরবার শরিফ দখলে নেওয়ার চেষ্টার মধ্যে ওই এলাকায় উত্তেজনা অব্যাহত আছে। এখনো কিছু লোকজন দরবার শরিফে লুটপাট চালাচ্ছে, গাছপালা কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
শুক্রবার পীরের ভক্তদের ‘লংমার্চ কর্মসূচি’ এবং প্রতিপক্ষের ‘প্রতিরোধের’ ঘোষণায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছে।
পরে ‘লংমার্চ’ স্থগিত করে পীরের ভক্তরা। দরবার শরিফে যাওয়ার সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।
এর মধ্যে শুক্রবার বিকালে ময়মনসিংহ ৩৯ বিজিবির পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদেরকে এখানে পাঠিয়েছেন। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
“দেশের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা কাজ করি। এ এলাকার লোকজনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তারা আমাদেরকে কথা দিয়েছেন পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রাখতে তারা আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন।”
মুর্শিদপুর পীরের দরবারে আবার অগ্নিসংযোগ-লুটপাট
শেরপুরে মুর্শিদপুর পীরের দরবারে আবার অগ্নিসংযোগ-লুটপাট
শেরপুরের মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলায় আহত একজনের মৃত্যু
এই পরিস্থিতির মধ্যে খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের বেশকিছু ভক্ত দরবার শরিফে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
দরবার শরিফের আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করায় দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে।
তবে নিরাপত্তার কারণে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা সেখানে যেতে পারছেন না। ফলে দরবার শরিফ ও প্রতিপক্ষের কারো সঙ্গে কথা বলা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ অগাস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই মুর্শিদপুর দরবার শরিফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের জামতলা এলাকার ফারাজিয়া আল আরাবিয়া ক্বওমী মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলামসহ স্থানীয় লোকজন।
এরই জেরে ২৬ নভেম্বর ভোরে একদল লোক দরবার শরিফে হামলা চালায়। এ সময় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়। আহতদের শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর মধ্যে দরবার শরিফ-বিরোধী হাফেজ উদ্দিনের অবস্থার অবনতি হয়। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে পরদিন ২৭ নভেম্বর সকালে তিনি মারা যান। এরপর থেকে সারা জেলায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
হাফেজ উদ্দিনের জানাজা শেষে ব্যাপক সংখ্যক লোকজন বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দরবারে হামলা চালায়। এ সময় ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। লুটপাট করে গরু, ছাগল, দুম্বাসহ মালামাল নিয়ে যাওয়ার ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।