ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগে রয়েছে; যার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান ইউএনও।
Published : 19 Sep 2024, 07:01 PM
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগে এক শিক্ষককে বিদ্যালয়ের কক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
খবর পেয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলার জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির আহমেদ চৌধুরী এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যৌনহয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠে। তাদের বদলির দাবিতে ২৫ অগাস্ট মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে তারা ইউএনও ইমদাদুল হক তালুকদারের কাছে ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠান ইউএনও।
তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই দুই শিক্ষককে সপ্তাহে একদিন বিদ্যালয়ে গিয়ে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের মৌখিক নির্দেশ দেন ইউএনও ইমদাদুল হক।
প্রধান শিক্ষক নির্দেশ মেনে চললেও সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ তা অমান্য করে প্রায়ই বিদ্যালয়ে যেতেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে রোববার বিষয়টি নেত্রকোণা জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করেন শিক্ষার্থীরা।
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষক হারুন অর রশিদ বিদ্যালয়ে গেলে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে তাকে উদ্ধার করে মদন সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ফরিদা আক্তার জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ওই দুই শিক্ষককে বিদ্যালয়ে যেতে বারণ করেছিলেন ইউএনও। কিন্তু হারুন অর রশিদ নির্দেশ অমান্য করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, “অন্যদিন শিক্ষার্থীদের থামানো গেলেও, আজকে সব শিক্ষককে কক্ষে আটকে তালা লাগিয়ে দেয় তারা। চারজন শিক্ষক বের হতে পারলেও হারুন সাহেবকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।”
ইউএনও ইমদাদুল হক বলেন, “ওই দুই শিক্ষককে কয়েকদিন বিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করেছিলাম। এরপরও হারুন সাহেব বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়াতেন এবং নানা কথা ছড়াতেন। এ নিয়ে তাকে অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।”
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ বদলির সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান ইউএনও।