শিশুদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কেক কাটলো দূতাবাসগুলো

এ বছর জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনবো হাসি সবার ঘরে’।

প্রবাস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2024, 02:19 PM
Updated : 18 March 2024, 02:19 PM

শিশু-কিশোরদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস।

রোববার আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল জন্মদিনের কেক কাটা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া, আলোচনা সভা, শিশুদের রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন।

এ বছর জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনবো হাসি সবার ঘরে’-এর ওপর আলোকপাত করে আয়োজিত উৎসব নিয়ে বিডিনিউজ ডটকমের কাছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে দূতাবাসগুলো। তারই কিছু এখানে সংকলিত হলো-

নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন দিনব্যাপী ‘শিশু-কিশোর আনন্দমেলা’ আয়োজন করেছে। ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ’ শিরোনামে বয়সভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় শিশু-কিশোররা।

সভায় অংশ নিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, “জাতিসংঘে শিশু সনদ গৃহীত হওয়ার প্রায় ১৫ বছর আগে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে জাতীয় শিশু আইন প্রণয়ন করেন এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করেন। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম স্নেহ ও ভালোবাসাকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৯৭ সাল হতে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হচ্ছে।”

রাষ্ট্রদূত ফিলিস্তিনে শিশুদের উপর ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিপীড়িত ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য বাংলাদেশ কাজ করে যাবে বলে উল্লেখ করেন। সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা।

ওয়াশিংটন ডি.সি, যুক্তরাষ্ট্র

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি.সিতে নানা কর্মসূচি হাতে নেয় বাংলাদেশ দূতাবাস।

আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বাংলাদেশের ইতিহাস-সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের পাশাপাশি স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা শিশুদের সামনে তুলে ধরার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করেন।

বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, মিনিস্টার (কমার্স) মো. সেলিম রেজা, মিনিস্টার (ইকোনমিক) মো. ফজলে রাব্বি, ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট ও ভিসা উইং) মুহাম্মদ আব্দুল হাই মিলটন এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি আতাউর রহমান।

কানাডা

কানাডার টরন্টোতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন কনসাল জেনারেল মো. ফারুক হোসেন।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব শিশু-কিশোরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ লাভ করতে থাকে। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে উঠেন বাংলার নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের শেষ আশ্রয়স্থল। তার জীবন ও আদর্শ অনুসরণে শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।” 

সংযুক্ত আরব আমিরাত

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমাদের প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর কবীর বাপপি জানান, জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর। সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর (লোকাল) লুতফুন নাহার নাজিম।

রাষ্ট্রদূত দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশকে প্রতিটি শিশুর বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি আবুধাবির সভাপতি ইফতেখার হোসেন বাবুল, জনতা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কামরুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ আবুধাবির জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি ইমরাদ হোসেন ইমু, রফিকুল ইসলাম, এসএম রফিকুল ইসলাম ও প্রিয়াংকা খন্দকার।

ডেনমার্ক

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে বাংলাদেশ দূতাবাস নানা আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে।

দূতাবাস মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নেন রাষ্ট্রদূত এ. কে. এম. শহীদুল করিম। তিনি বঙ্গবন্ধুর শৈশবের উপর আলোকপাত করেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে শিশু আইন প্রণয়ন এবং শিশুদের অধিকার রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।

ব্রাজিল

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়াতে দিবসটি উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, “বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন এবং শিশুদের অধিকার রক্ষায় জাতিসংঘ শিশু সনদের ১৫ বছর আগে ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেছিলেন। শিশুশিক্ষার বিকাশ নিশ্চিত করতে প্রাথমিক শিক্ষাকে বঙ্গবন্ধু জাতীয়করণ করেন।”

ভিয়েতনাম

ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া এবং প্যাসিফিক বিভাগের উপ-মহাপরিচালক চিন থি তাম।

মিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান নাসির উদদীনের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমান। ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ভিয়েতনামে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি শিশুরা এবং হ্যানয়ে সেন্টার ফর এডুকেশন অ্যান্ড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের এক ঝাঁক শিশু।

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়া থেকে আমাদের প্রতিনিধি রফিক আহমদ খান জানান, কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে।

এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের হাই কমিশনার মো. শামীম আহসান, তার স্ত্রী পেন্ডোরা চৌধুরী এবং মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মিয়ানমার

দিবসটি উপলক্ষ্যে মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেন স্থানীয় একটি স্কুলের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য আফটারস্কুল প্রোগ্রাম স্পন্সর করার ঘোষণা দেন।

জাতীয় শিশু দিবসে শিশুদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু ছোটবেলা থেকেই সৎ, সাহসী, পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল, দানশীল, ত্যাগী ও নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের এই অনন্য দিকগুলো আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে হবে।”

গ্রিস

গ্রিস থেকে আমাদের প্রতিনিধি মতিউর রহমান মুন্না জানান, দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদের সভাপতিত্বে এবং দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব রাবেয়া বেগমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রবাসে সাংবাদিকতায় অবদান রাখায় ৫ সাংবাদিককে সম্মাননা পদক তুলে দেন রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ। বক্তব্য দেন দূতাবাসের মিনিস্টার মোহাম্মদ খালেদ, কাউন্সেলর (শ্রম) বিশ্বজিৎ কুমার পাল, বাংলাদেশ কমিউনিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, গ্রিস আওয়ামী লীগের সভাপতি মান্নান মাতব্বর, সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার এবং আরিফ হোসেন।