“যারা ওই আমাদের উপর স্যাংশন দেয়- আমেরিকা তাদেরও কোনও উদ্বেগ নাই,” মাদক কারবারিদের হাতে সম্প্রতি বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা নিহতের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
Published : 25 Nov 2022, 07:35 PM
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যায় জড়িত ও সাজাপ্রাপ্ত এক খুনিকে আমেরিকা ‘লালন পালন’ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির মানবাধিকার প্রসঙ্গে অবস্থানের সমালোচনাও করেন।
শুক্রবার বিকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) জাতীয় সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
নানা বাধা থাকলেও নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডে দণ্ডিত বাকিদেরও বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে ধরে এনে সাজা দেওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ব্যাংকে টাকা নেই গুজব, রিজার্ভসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্যের পাশাপাশি মানবাধিকার প্রসঙ্গে আমেরিকা ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থার কার্যক্রম ও অবস্থানের সমালোচনা করেন।
জাতির পিতার সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি আর জনগণের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। অন্তত তারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল বলেই এই হত্যার (বঙ্গবন্ধু হত্যার) বিচার করতে পেরেছি।”
এখনও কিছু খুনি সাজার বাইরে রয়ে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমেরিকায় এক খুনি রয়ে গেছে, তাকে বারবার আনার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যেহেতু তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে। আমেরিকা…তারা সেই খুনিকে লালন পালন করছে। অবশ্য আমেরিকার কারবারই এরকম।”
এ বিষয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এখানে যেরকম একজন ড্রাগ ডিলার, যাকে বারবার ড্রাগসহ ধরতে গেছে পুলিশ; তার উপর (পুলিশের উপর) হামলা করেছে, র্যাব ধরতে গেছে হামলা করেছে। ১৪টা মামলার আসামি এবং এই ড্রাগসহ ধরা পড়ে সে পুলিশের উপর- তার গ্রুপ গুলি করে, র্যাবের উপর গুলি করে। তারপর সেও গুলি খায় মারা যায়।”
তার জন্য দেশের কিছু লোক বিভিন্ন জায়গায় তদবির করে বেড়ায় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “অথচ এই ড্রাগ ডিলারদের খোঁজ আনতে গিয়ে, ধরতে যেয়ে আমাদেরই একজন এয়ার ফোর্সের অফিসার তাদেরকে ড্রাগ ডিলাররা অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং অত্যন্ত নির্মমভাবেই তাকে মারে, হত্যা করে। এইমাত্র কিছুদিন আগের ঘটনা।
“এ ব্যাপারে কিন্তু এদের কোনো উদ্বেগ নাই। মানবাধিকার সংস্থাগুলোরও উদ্বেগ নাই বা যারা ওই আমাদের উপর স্যাংশন দেয়- আমেরিকা তাদেরও কোনও উদ্বেগ নাই। কারও কোনও উদ্যোগ নাই।”
এতে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেমন একটা অদ্ভুত বিশ্ব পরিস্থিতি সেটাই আমার কাছে অবাক লাগে।”
ব্যাংকে টাকা আর রিজার্ভ নিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রীর অভয়
বঙ্গবন্ধুর পালিয়ে থাকা খুনীদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “খুনিদের লালন পালন করা-একজন কানাডায়, একজন পড়ে আছে আমেরিকায় আর দুইজন পাকিস্তানে। পাকিস্তানে রশীদ আর ডালিম। আরেকজনের খবর পাওয়া যাচ্ছে না কখনও ইন্ডিয়াতে কখনও জার্মানিতে- বিভিন্ন জায়গায় মোসলেহ উদ্দিন।”
“তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা আছে যে পৃথিবীর যেখানেই থাক যেভাবেই হোক এদেরকে ধরে এনে এদের সাজা অবশ্যই আমরা নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ। সেটাই আমি চাই।”
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি এম ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব এম এ আজিজ বক্তব্য রাখেন।