সালমান রহমানের বাড়িতে গেলেন আজরা জেয়া; তার সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার।
Published : 14 Jul 2023, 02:09 AM
সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাড়িতে নৈশভোজে অংশ নিলেন।
এরপর সালমান রহমান দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব অনেকটাই কমেছে।
বৃহস্পতিবার সালমান রহমানের গুলশানের বাড়িতে এই নৈশভোজে জেয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুও ছিলেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও এতে অংশ নেন।
নৈশভোজে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আজরা জেয়ার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে সালমান রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, একদিন আগে ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে হওয়ায় সন্তোষ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি।
তার ভাষ্যে, “গতকাল (বুধবার) আমাদের যে দুইটা র্যালি হয়েছে, আওয়ামী লীগের আর বিএনপির, এটা সুন্দরভাবে, কোনো ঝামেলা হয় নাই, এটা তারা খুব অ্যাপ্রেশিয়েট করেছে।
“পুলিশের ভূমিকাটিকে তারা অভিনন্দন জানাইছেন; বলেছেন যে এভাবে যদি আগামীতে কন্টিনিউ করে, তাহলে তাদের যে ইচ্ছা, তারা যে চাচ্ছে, গতকালের জিনিসটাই তারা মনে করল এটা একটা মডেল সেটআপ হয়েছে। এই মডেলটাই যেন আপনারা ভবিষ্যতে ফলো করেন।”
জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আন্ডার সেক্রেটারির এই সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আজরা জেয়া বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বৈঠক করেন তিনি। তিনি সেখানে বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যে ভূমিকা দরকার, যুক্তরাষ্ট্র তা রাখবে।
সালমান রহমান বলেন, “আমরা বলেছি, কালকে দুই দলই সুন্দরভাবে করতে পেরেছে, যেহেতু বিএনপি কোনো প্রভোকেশন করেনি। নর্মালি আমাদের যখনই শুরু হয় পুলিশের সাথে, বিএনপি শুরু করে, ওরা প্রভোক করে, কালকে তারা সুন্দরভাবে বিহেভ করেছে, কোনো প্রভোক করে নাই, পুলিশও কিছু করেনি।”
বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনে যারা বাধা হবে, তাদের ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নৈশভোজে ভিসা নীতি নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে- এ প্রশ্নে সালমান রহমান বলেন, “উনারা বারবার বলেছেন একই কথা যে ‘আমরা এই ভিসা নীতি যে করেছি, ওটা কোনো দলকে বা কোনো বিশেষ কাউকে লক্ষ্য করে করি নাই, আমরা মনে করি যে, এই ভিসানীতির কারণে আপনাদের নির্বাচনটা আরও ভালো হবে’।
“যে কথাটা তারা পাবলিকলি বলেছে, আপনি তো শুনেছেন, উনি তো আজকে এ কথাটিই বলেছেন। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের কমিটমেন্ট করছেন, উনার এই কমিটমেন্টটাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আমরা এই ভিসানীতিটা করেছি। তারা বলেছে, আমরা কোনো দলের পক্ষে নাই। আমরা একটা সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন চাই।
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে সালমান রহমান বলেন, “না, সেটা নিয়ে উনারা কোনো কথা বলেন নাই। নির্বাচন নিয়ে তাদের একটাই কথা, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ইলেকশন। এই হলো তাদের কথা। এর বাইরে তারা কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলে নাই।
“তারা শুধু বলছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। এর বাইরে তাদের কোনো শর্ত নাই, কোনো নতুন কন্ডিশন যে, এটা করতে হবে। এটা বাস্তবায়ন করার জন্য আপনাদেরকে এই এই করতে হবে, তারা সেটা বলতেছে না। কোনো নতুন প্রস্তাব তারা দেয় নাই।”
দুদেশের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হলেও, এখন দূরত্ব ‘কমে এসেছে’ বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “কিছু ভুল বোঝাবুঝি তো নিশ্চয়ই আছে, যদি ভুল বোঝাবুঝি না থাকত, তাহলে স্যাংশন, ভিসা নীতি ….. যাই বলেন, যেটা তারা করেছে ….
“আমার কথাটা হলো, আমি যেটা উনাদেরকে বলেছি যে, আমরা এটাকে স্বাগত জানাই যে, আপনারা এসছেন। বলেছি, দুই বন্ধুর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হইতেই পারে, কিন্তু এই ভুল বোঝাবুঝিটাকে ঠিক করার পদ্ধতিটা হলো অ্যাংগেজমেন্ট আর এক আরেকজনের সাথে কথা বলা।
আমার পয়েন্ট অব ভিউ তাদের বোঝা, তাদের পয়েন্ট অব ভিউ আমাদের বোঝা। এটা সম্ভব, যদি এই এঙ্গেজমেন্টটা হয়। আমরা ওদেরকে স্বাগত জানাইছি যে, আপনারা এসেছেন, হাই লেভেলে, হায়ার লেভেলে প্রতিনিধিরা আসতেছেন।”
সালমান বলেন, “মেইন ভুল বোঝাবুঝি ছিল র্যাব স্যাংশনটা। র্যাবের স্যাংশনের পরে তো আমরা একটা প্রসেস শুরু করে দিলাম। তারাও আমাদেরকে বলল যে, এনগেইজমেন্টটা চালু থাকুক। আলোচনার প্রক্রিয়াটা যেন চালু রাখে, আমরা সেটাই চাই।”
দুদেশের মধ্যে দূরত্ব কমেছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “ডেফিনিটলি দূরত্বটা কমেছে।”