ঠাকুরগাঁওয়ে একযোগে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা রহস্যজনক: ফখরুল

সড়কের পাশের মন্দিরে ভাংচুরের সময় পুলিশ কোথায় ছিল, প্রশ্ন বিএনপি মহাসচিবের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2023, 02:54 PM
Updated : 6 Feb 2023, 02:54 PM

নিজের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বিভিন্ন মন্দিরে একযোগে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই ঘটনা শুধু ন্যক্কারজনকই নয়, তা রহস্যজনক, পূর্ব পরিকল্পিত এবং কলঙ্কজনক। এর নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।”

বিএনপি মহাসচিব নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে সরকারি খরচে মন্দিরগুলো সংস্কারসহ পুনর্নিমাণের দাবিও জানান।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, “যে সকল মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার বেশিরভাগই সড়কের পাশে স্থাপিত ছিল। রাতে সাধারণত টহল পুলিশ থাকে।

“কিন্তু সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিও রহস্যজনক। তাদের গাফিলতিতে দুর্বৃত্তরা অনায়াসে এত বিপুল সংখ্যক মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটাতে পেরেছে বলে সাধারণের ধারণা। সরকার এর দায় এড়াতে পারে না।”

শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর রাত পর্যন্ত সময়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা, চাড়োল ও পাড়িয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে কয়েকটি মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর হয়।

এভাবে রাতের আঁধারে মন্দিরের পর মন্দিরে ভাংচুর করা চালিয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন এখনও তাদের চিহ্নিত করতে পারেনি। স্থানীয়দের ধারণা, ‘দীর্ঘ পরিকল্পনা’ নিয়ে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই’ এ ঘটনা ঘটিয়েছে সংঘবদ্ধ কোনো চক্র।

Also Read: সম্প্রীতির জনপদে প্রতিমার গায়ে ক্ষত

বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল দৃষ্টান্ত। হিন্দু ধর্মালম্বীদের মন্দির, প্রতিমা ভাংচুর করে যারা সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় তারা নরকের কীট।

“আমি অবিলম্বে বালিয়াডাঙ্গীর মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনার সাথে জড়িতদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

তবে এই ঘটনায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত’ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহবানও জানান তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দেশে চলমান দুঃশাসনে এমন এক অস্বাভাবিক ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে অপরাধ করলেও দলীয় বিবেচনায় প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। যার ফলে অপরাধীরা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে নতুন নতুন অপরাধ করতেই থাকে।

“দেশ আজ যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। জনগণ আজ চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বটেই, সামাজিক ও ধর্মীয় কাজও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সম্পন্ন করতে হচ্ছে।”

এর আগেও মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও হামলার ঘটনায় কোনো বিচার না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দেশের বিভিন্ন জায়গায় যখনই হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি-সম্পদ, বাড়ি, ব্যবসা দখল, মন্দির, প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে, সেসব ঘটনার সাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

“এর আগেও বালিয়াডাঙ্গীতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও তার পরিবারের সদস্য এবং তার অনুগত লোকজন তারা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল নয় তাদের উপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। তখনও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয় হয়নি।”