জিয়ার কবর জিয়ারতের পর বিএনপি নেতারা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন।
Published : 11 Apr 2024, 01:43 PM
এবার ঈদ সাধারণ মানুষ কাছে ‘দুঃখ-কষ্টে’র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পরে সংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
ফখরুল বলেন, “এবারকার ঈদ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটা দুঃখ নিয়ে এসেছে, কষ্ট নিয়ে এসেছে। ঈদে কী করি আমরা? ঈদে সাধারণত ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী-বাচ্চাদেরকে কাপড় দেই। সেই কাপড় আমরা দিতে পারছি না। ভালো খাবার দেই, সেই খাবার আমরা দিতে পারছি না। সাধারণ মানুষরা তাদের ছেলে-মেয়েদের সেই খাবার দিতে পারছে না।”
এই অবস্থার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সুপরিকল্পিতভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একেবারে ধবংস করে দেশকে পরনির্ভরশীল করার জন্যই বর্তমান সরকার এসব করছে।”
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা জানেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, হত্যা করেছে, নিপীড়ন-নির্যাতন করেছে, কারাগারে নিক্ষেপ করেছে।”
“তারপরেও এদেশের মানুষ তারা গণতন্ত্রের জন্য, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে সংগ্রাম করে চলেছে, লড়াই করে চলেছে।”
বান্দরবানে ব্যাংক ও থানায় হামলার ঘটনা সম্পর্কিত এক প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে একটামাত্র অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে। সেই অ্যাসাইনমেন্ট হচ্ছে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করে দেয়া। প্রথমে পিলখানায় বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) ঘটনা থেকে শুরু হয়েছে। বিডিআরের সৈনিকরা এখন পর্যন্ত জেল থেকে বেরোতে পারেনি। প্রায় ৭০০ বিডিআর সৈনিক ১৬ বছর ধরে বিচারের অপেক্ষায় কারাগারে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
“ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে পরনির্ভরশীল করে দেয়া, ধ্বংস করে দেয়া- এই অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে তারা এগুচ্ছে।”
সকাল সাড়ে ১১টায় দলের মির্জা ফখরুল স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদেরকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
এ সময়ে বিএনপির আহমেদ আজম খান, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, রফিকুল ইসলাম জামাল, আবেদ রাজা, রফিক শিকদার, মহানগরের আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, ইয়াসীন আলীসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতি ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার স্বামী জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ ধারাবাহিকতা অনুসরণ করছেন।
টুকুর বাসায় মহাসচিব
পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম আসাদ গেইটে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন, তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বর্তমানে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।