কেবল বিএনপি কার্যালয় নয়, সারাদেশই ‘তালাবদ্ধ’: রিজভী

বিএনপি নেতা বলেন, ‘ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রামে’ জনগণের ‘অভাবনীয় অংশগ্রহণ’ দেখে সরকার প্রধানের মধ্যে ক্ষমতা হারানোর আতঙ্ক পেয়ে বসেছে।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2023, 02:51 PM
Updated : 11 Nov 2023, 02:51 PM

সরকার শুধু বিএনপির কার্যালয় নয়, সারাদেশকে ‘তালাবদ্ধ’ করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র ‍যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার বিকালে আত্মগোপনে থেকে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে সমাবেশের দিন কাকরাইল ও বিজয়নগরে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর দিন থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলছে।

সেই বিষয়টির কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, “যে সমস্ত জায়গায় আমরা সংবাদ সম্মেলন করতাম, বিশেষ করে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, আপনারা জানেন পুলিশ দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তারা সেখানে প্রতি মুহূর্তে অবস্থান করছে। তালা মারার এই পরিস্থিতি শুধু পার্টি অফিসে নয়, ওরা সারাদেশেই তালা মেরে রেখেছে।

“ওরা তালা মেরে রেখেছে, বন্দি করে রেখেছে গণতন্ত্রকামী মানুষকে যাতে তারা কথা বলতে না পারে, যাতে তারা সত্য উচ্চারণ করতে না পারে। ঘরে ঘরে এখন আতঙ্ক। মানুষের সুখ-শান্তি সব ধ্বংস করে জল্লাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে শেখ হাসিনা।”

‘দমন পীড়নে’ এক দফা আন্দোলন ঠেকানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘‘জনগণের এই ত্যাগ বৃথা যাবে না। গণতন্ত্রের বিজয় হবেই ইনশাল্লাহ।”

‘ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রামে’ জনগণের ‘অভাবনীয় অংশগ্রহণ’ দেখে সরকার প্রধানের মধ্যে ক্ষমতা হারানোর আতঙ্ক পেয়ে বসেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, “তার নির্দেশে দেশকে রীতিমতো শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে নিক্ষেপ করা হয়েছে।”

জনগণ এখন মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ভয়ংকর পরিবেশে বসবাস করছে দাবি করে রিজভী বলেন, “পুলিশের অতিদলবাজরা এখন আওয়ামী লীগ লিমিটেড কোম্পানির কর্মচারীতে পরিণত হয়েছে।

“আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘দলবাজ’ এবং যুবলীগ-ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগরা ‘রাজাকার’ এর ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।”

গত ২৪ ঘন্টায় সারা দেশে ৩১৫ জনকে এবং ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ১৩ হাজার ৩৮৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং ৪৮ হাজার ৪৪৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার অভিযোগও করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

‘বাসে আগুন দিচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা’

অবরোধে বাসে আগুনের ঘটনায় বিএনপির দায় অস্বীকার করে রিজভী অভিযোগ করেন, “আমাদের এই গণতান্ত্রিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। এই আগুন দিচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকেরা।”

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হাতুড়ি-চাপাতি-লগি-বৈঠাধারী ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীরা’ যানবাহনে আগুন দিচ্ছে, তাণ্ডব চালাচ্ছে।”

এর অসংখ্য প্রমাণ, ভিডিও চিত্র, স্থিরচিত্র বিএনপির হাতে আছে দাবি করে তিনি বলেন, “গণমাধ্যমেও কিন্তু ক্রমান্বয়ে এগুলো প্রকাশ পাচ্ছে।

“এই যে কোরাস গাইছেন যে, সহিংস কর্মসূচি, অগ্নি সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাস… এসব বলে প্রতিদিন ওবায়দুল কাদের সাহেব, হাছান মাহমুদ সাহেবরা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন… আপনাদের অপপ্রচার জনগণ বিশ্বাস করে না।”

রোববার ভোর থেকে চতুর্থ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ সফল করতে মাঠে নামার অনুরোধ করে রিজভী বলেন, “রাজপথ, রেলপথ, নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানাচ্ছি।”