ডিবি অফিস এখন হয়েছে ‘ভাতের হোটেল’: রিজভী

ডিবি কার্যালয় কার্যত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের জন্য ব্যবহার হয় বলে বিএনপি নেতার অভিযোগ।

ডিবি কার্যালয়ে সাম্প্রতিক আপ্যায়নের চিত্র।

গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আপ্যায়নের দিকে ইঙ্গিত করে এই দপ্তরকে ‘ভাতের হোটেল’ বলেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বুধবার নয়া পল্টনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, “আজকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলছেন, মানুষ নাকি অভিযোগ নিয়ে যায়, তার নিরাপত্তার জন্য সেখানে নেওয়া হয়। আমরা তো জানি, গোয়েন্দা দপ্তরে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জন্য একটি আতঙ্ক ঘর, আয়না ঘর সেখানে আছে।

“আর এখন কি হয়েছে জানেন? এখন গোয়েন্দা দপ্তর হয়েছে ভাতের হোটেল। তাই না? ভাতের হোটেল।”

গত ২৯ জুলাই ঢাকায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি থেকে মারধরের পর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ডিবি কার্যালয়ে আপ্যায়ন করান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে এরপর ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে যাওয়া অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস এবং সুড়ঙ্গ চলচ্চিত্রের কলাকুশলীদেরও আপ্যায়ন করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন বলছেন, “লাঞ্চ টাইমে যদি কেউ আসে আমার অফিসে, এটা আমার দীর্ঘদিনের একটা প্র্যাক্টিস, তাদেরকে আমি লাঞ্চটা অফার করি।”

খাইয়ে ছবি তোলা ‘নিম্ন মানের মশকরা’, বললেন গয়েশ্বর

ওই দিন 'সুড়ঙ্গ’ টিমকেও খাইয়েছিলেন ডিবির হারুন

ডিবি কার্যালয়ে অপু বিশ্বাস: খাবার খেলেন, অভিযোগও দিলেন

বিক্ষোভ সমাবেশে রিজভী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলকে দমনে ডিবিসহ পুলিশকে দিয়ে মামলা করানোর অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, “অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র সেখানে করা হচ্ছে। আমরা অনেক ঘটনা জানি, কোথায় কী ষড়যন্ত্র হয়, কাকে কোথায় থেকে নিয়ে আসা হয়… কত কিছু করা হয়। আমাদের নেতাদের ধরে উধাও করা হয় ৪/৫দিন। তারপরে বলা হয় উনি মহানগর গোয়েন্দা দপ্তরে আছেন বা ডিবি পুলিশের কাছে আছে। কয়েকদিন পরে থানায় দেওয়া হয়।”

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী।

তিনি বলেন, “কত নীচ যে তারেক রহমান আর ডা. জোবায়দা রহমান, তার মতো একজন পরিশীলিত নারী, দেশের একটি সম্ভান্ত পরিবারের মেয়ে, তাদের নামে কাল্পনিক অসত্য, মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করে তাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে।

“দেশনেত্রীর নামে বানোয়াট মামলা দিয়ে ওরা নিরাপদ মনে করছে না। এখন তারেক রহমানকে মামলা দিয়ে তারা নিরাপদ মনে করছে না। এখন ডা. জোবায়দা রহমানকেও তারা পথের কাঁটা মনে করছে।”

সরকারের দুর্নীতি-লুটপাট ‘আলিফ-লাইলার নাটকের কাছেও হার মানে’ বলে মন্তব্য করেন রিজভী।

সমাবেশে মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজমুন নাহার বেবী, নেওয়াজ হালিমা আর্লি, শাম্মী আখতার, শাহানা আখতার সানু, এলিজা জামান, ঢাকা মহানগর নেতা নায়াব ইউসুফ, রুমা আখতার বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল বেরিয়ে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় ঘুরে নয়া পল্টনে ফিরে শেষ হয়।