বিএনপি তাকিয়ে ‘নিষেধাজ্ঞা’র দিকে: কাদের

“স্যাংশনকে আমরা ভয় পাই না। আমরা আমাদের জনগণের সঙ্গে আছি,” বলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2023, 04:50 PM
Updated : 17 May 2023, 04:50 PM

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে দলটিকে ‘আগুন নিয়ে না খেলতে’ সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "আগুন নিয়ে খেলবেন না। এত লাফালাফি কেন? লম্ফঝম্ফ করে কোনো লাভ নেই।

“যে হাতে আগুন নিয়েছেন, ওই হাত পুড়িয়ে দেব। ভাঙচুর করলে ওই হাত ভেঙে দেব। আগুন হাতে আসবেন না, ওই হাত গুঁড়িয়ে দেব। আপনারা নির্বাচনে আসবেন কি আসবেন না, সেটা আপনাদের ব্যাপার ৷ কিন্তু নির্বাচন হতে দেবেন না, এত শক্তি কোথায় পেলেন?"

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে দলীয়ভাবে এ আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।

এতে বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে কাদের বলেন, "আমরা জানি এখন কোথায় তাকিয়ে আছেন। চাতক অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে কখন স্যাংশন আসে। ইউ আর রঙ মিস্টার ফখরুল, মিস্টার মোশাররফ। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা বাংলাদেশের জনগণ।

“স্যাংশনকে আমরা ভয় পাই না। আমরা আমাদের জনগণের সঙ্গে আছি। তাদের শক্তি নিয়ে আমরা বড় গলায় কথা বলি। কাজেই হুমকি ধামকি দেবেন না। নির্বাচন ভালো না লাগলে আপনি না আসতে পারেন। আমরা জোর করে কাউকে আনব না। কিন্তু নির্বাচন হতে দেবেন না, এটা কি বাপ দাদার সম্পত্তি আপনাদের?

এসময় দলীয় নেতাকর্মীদের ‘মাথা ঠাণ্ডা’ রেখে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার কথা বলেন কাদের।

তিনি বলেন, "নির্বাচনের সময় আর বেশি নেই, আমাদের মাথা ঠাণ্ডা করে চলতে হবে। কাউকে আক্রমণ করব না, কিন্তু আক্রান্ত হলে কাউকে ছাড়ব না। আমরা আক্রমণ করতে যাব না, কিন্তু আক্রান্ত হলে আওয়ামী লীগ নেহি ছোরে গা... কাউকে ছাড়ব না এটা, আবারও বলে দিতে চাই।"

বক্তব্যের শুরুতে জাতিসংঘের ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’কে স্বীকৃতি দেওয়ায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।

বিএনপির সরকারের সময়ে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, "তারা যে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল, সেটিকে এখন বিশ্ব অসামান্য উদ্ভাবন হিসেবে স্বীকৃত দিয়েছে, সম্মানিত করেছে।

"যে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে সরে এসেছে সেই বিশ্ব ব্যাংক আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধান অতিথি করে অনুষ্ঠান করেছে। আইএমএফ প্রধান বলেছেন, আমরা ঋণ দিয়েছি কারণ ঋণ ফেরত দেওয়ার সামর্থ্য যাদের আছে তাদের ঋণ দিয়েছি। বাংলাদেশের ঋণ শোধ করার সামর্থ্য আছে, সে কারণে ঋণ দিয়েছি।”

বাংলাদেশের অর্থনীতি যাতে আরও ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী জাপান-ওয়াশিংটন গেছেন উল্লেখ করে কাদের বলেন, "ফখরুল সাহেব সমালোচনা করেন, বুঝে করেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে না কি বৈঠক হয়নি। ঋষি সুনাক বলেছেন, তার পরিবার প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করছেন। আপনি আমার গোটা পরিবারের অনুপ্রেরণা। সারা দুনিয়া তাকে প্রশংসা করে অভিনন্দন জানায়; আর জন্মভুমি এই বাংলাদেশের একটি মহল শত্রুতার বশে বারেবারে তার বিরুদ্ধাচারন করে।

"বিএনপির মন ছোট। এদের মন বড় নয়। এরা দেশের বড় অর্জনেও প্রশংসা করে না। দেশের উন্নয়ন দেখলে তাদের জ্বলে। সেই জ্বালায় জ্বালায় এরা মরে।"

ত্রিদেশীয় সফর থেকে শেখ হাসিনা খালি হাতে ফেরেননি বলেও দাবি করেন কাদের।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং উপদপ্তর সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, জেবুন্নছা হক, সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণর সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন ও মারুফা আক্তার পপি উপস্থিত ছিলেন।