নির্বাচন নিয়ে ‘মাথা ঘামাতে’ বিদেশিদের বারণ করলেন কাদের

“এটা সারা দেশে প্রমাণ হয়ে গেছে যে, বিএনপি আন্দোলনে পরাজিত,” বলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2023, 04:17 PM
Updated : 19 May 2023, 04:17 PM

বিএনপি যতই নালিশ করুক, তাতে কান না দিতে ‘বিদেশি বন্ধুদের’ প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, “নির্বাচন কারও জন্য বসে থাকবে না। দুনিয়ার অন্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে হবে।

“বিদেশি বন্ধুদের বলব, বিএনপি আপনাদের যতই নালিশ করুক, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই- আমার দেশে ক্লিন, ফেয়ার, অবাধ, সুষ্ঠু একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন হবে আগামী নির্বাচন। আপনাদের কারও এ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।"

শুক্রবার ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

সমাবেশে বিএনপিকে ‘কোমড় ভাঙা দল’ অ্যাখ্যায়িত করে তাদের ‘কাকুতি মিনতি’ না শুনতে কূটনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

"এদের কথা শুনে লাভ নেই। জনগণের সঙ্গে গিয়ে কথা বলুন। কূটনীতিক বন্ধুরা আপনারা মানুষের সঙ্গে কথা বলুন, তারা কী চায়। বিএনপি জানে না, তারা কী চায়। তারা (বিএনপি) এটা জানে, ভোট হলে তাদের খবর থাকবে না। বাধ্য হয়ে এজন্য তারা আন্দোলন করছে,” বলেন তিনি।

বিএনপি আন্দোলনে জয়ী হবে তা এখন দলটির কর্মীরা আর বিশ্বাস করছে না বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “ফখরুল সাহেব যত লাফালাফি করেন, আন্দোলনের দিন শেষ। পদযাত্রা মানববন্ধন করেন, আন্দোলনের জন্য মানুষ আর আসবে না। মানুষ বুঝে গেছে কোমড়ভাঙা দল বিএনপিকে দিয়ে কিছুই হবে না। এখন বিএনপির কর্মীরা একজন আরেকজনকে বলে, ‘কী আন্দোলন করবে, এ তো হাঁটু ভাঙা দল’। বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না।

"এটা সারা দেশে প্রমাণ হয়ে গেছে যে, বিএনপি আন্দোলনে পরাজিত। নির্বাচনেও শেখ হাসিনা ধারে কাছেও যেতে পারবে না। এজন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে ক্ষমতায় যেতে।"

কাদের বলেন, "আন্দোলনে নেতা নেই, নির্বাচনে নেতা নেই। কাকে নিয়ে এগোবে? কাকে নিয়ে ভোট করবেন? কাকে নিয়ে শেখ হাসিনাকে হটাবেন? অস্ত্র নিয়ে, বোমা মেরে, পেট্রোল বোমা আর যদি মারতে চান- বাংলার জনগণ রুখে দাঁড়াবে।"

বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে ‘অন্তিম যাত্রা’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, "উপরে উপরে পদযাত্রা আর তলে সহিংসতা। উপরে দেখাচ্ছে আমরা নরম, ভেতরে ভেতরে আগুন সন্ত্রাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে।" 

বিএনপির গুলশান ও নয়াপল্টন অফিসকে গুজব আর মিথ্যার কারখানা বর্ণনা করে তিনি বলেন, "বিএনপি নেতারা গুলশানে একটি গুজবের কারখানা করেছে। সেখান থেকে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ায়। অনলাইনে আজগুবি যতসব মিথ্যা কথা বলে অপপ্রচার করছে।

“মিথ্যাচারের আরেকটি ফ্যাক্টরি নয়াপল্টনে। সেখান থেকে ষড়যন্ত্র আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশের রাজনীতি করছে। শেখ হাসিনার সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসতে টাকা ছড়িয়ে লবিং করছে, ষড়যন্ত্র করছে।"

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে দেশে দেশে সংকটের চিত্র তুলে ধরে কাদের বলেন, "আজকে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি ৩৩ ভাগ, আর্জেন্টিনা মেসির দেশ- তাদের মূল্যস্ফীতি ১০০ ভাগ, তার্কিতে নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে মূল্যস্ফীতি ৮৬ ভাগ; সেখানে শেখ হাসিনা এখনও সামাল দিয়ে ৯ এর নিচে রেখেছেন মূল্যস্ফীতি।”

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।