বিদেশিদের চাটুকারিতা করছে কিছু মানুষ: দীপু মনি

“যখন কেউ চোখ রাঙায়, বঙ্গবন্ধুকন্যা তা এড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন,” বলেন আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সম্পাদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2023, 02:10 PM
Updated : 7 June 2023, 02:10 PM

বিদেশিদের চাটুকারিতা করে কিছু মানুষ ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

তিনি বলেছেন, “বঙ্গবন্ধুর সেই যে অবিসংবাদিত নেতৃত্ব- বাঙ্গালির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, তার মত করে আজকের দিনে তার কন্যা শেখ হাসিনাও সেই অর্থে আমাদের অবিসংবাদিত নেতা। তিনিও বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

“ঠিক সেই সময়ের মতই এখনও ভেতরে-বাইরে ষড়যন্ত্র। এখনও দেশের ভেতরে কিছু মানুষ আছে ষড়যন্ত্র করছে কী করে বিদেশিদের পদলেহন করে আমাদের বাধাগ্রস্ত করা যায়।”

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত ‘৬ দফা: বাঙালির মুক্তির সনদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, “আজকেও আমাদের অবিচল-ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আমাদের স্বাধীনতা-গণতন্ত্র ও উন্নয়নের প্রশ্নে অবচল থাকতে হবে, আমাদের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখতে হবে, আমাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

“যখন কেউ চোখ রাঙায়, তিনি তা এড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন, পদ্মার বুকে সেতু তুলে দিতে পারেন। তাই আমরা যাতে শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখি, বিশ্বাস রাখি।”

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “৬ দফার মূল লক্ষ্য ছিল এক দফা। বঙ্গবন্ধুর সমাজকে চেনার, মানুষকে চেনার ইতিহাসকে বোঝার ক্ষমতা ছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন আমরা এক উপনিবেশ থেকে আরেক উপনিবেশে পড়েছি। বঙ্গবন্ধু সেটা মানতে পারেননি। তাই তিনি সবার মতামত নিয়েই স্বাধীনতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

“ছয় দফা যে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যাবে- তা পাকিস্তানিরা খুব ভালভাবেই বুঝেছিল। এ কারণেই তারা বঙ্গবন্ধুর ওপর তারা এসব নির্যাতন চালিয়েছে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বয়ানেও আমরা পেয়েছি যে বঙ্গবন্ধু এটা বিশ্বাস করতেন না যে- পাকিস্তান কাঠামোর মধ্যে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন আছে৷ কাজেই বেরিয়ে আসতে হবে। আর বেরিয়ে আসার রাস্তাটাই হচ্ছে ছয় দফা।”

দীপু মনি বলেন, “দেশভাগের এক মাসের মধ্যে তিনি (বঙ্গবন্ধু) একটি যুব সংগঠন করলেন, তার পরপরই তিনি একটি ছাত্রসংগঠন করলেন। তিনি জানতেন, বাঙালির স্বাধীনতা নয় এটি, বাঙালির স্বাধীনতার জন্য তাকে সংগ্রাম করতে হবে। সেজন্যেই তিনি এই তরুণ প্রজন্মকে সংগঠিত করেছিলেন।”

ভাষা আন্দোলনের মূল নেতৃত্ব যে বঙ্গবন্ধুই দিয়েছিলেন, সে কথা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “তিনি বুঝেছিলেন বলেই তিনি তার লক্ষ্য ঠিক করে রেখেছিলেন। এটি যে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড হবে তার সেই বিশ্বাস থেকে তিনি একেবারেই সরে যাননি। ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনে প্রথম গ্রেপ্তারদের মধ্যে তিনি একজন। এরপর আমরা ইতিহাসকে হাইজ্যাক হয়ে যেতে দেখেছি।

“পরে সেগুলো ঠিক জায়গায় ফিরে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচার মতো ১৪ খণ্ডে গোয়েন্দা যে প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা গেছে- তিনি কী কী অপরাধ করেছিলেন, সেই অপরাধগুলো দেখলে বোঝা যায় ভাষা আন্দোলনের মূল নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন।”

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অজিত কুমার সরকার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত।