আওয়ামী লীগ নেতা নানক ১৪ দলীয় ঐক্যে ‘বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে’ ওই মন্তব্য করেছেন কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে জাসদ।
Published : 26 Aug 2022, 11:12 PM
‘মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আড্ডাখানা’ হিসাবেই জাসদ গণবাহিনী গঠন করেছিল বলে যে মন্তব্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক করেছেন, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির পক্ষে দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, “জাসদ নিয়ে জনাব জাহাঙ্গীর কবির নানকের বক্তব্য শুধুমাত্র নির্জলা মিথ্যাচারই নয়, তার রাজনৈতিক অজ্ঞতারই বহিঃপ্রকাশ।
“জাসদ শতকরা একশত ভাগ মুক্তিযোদ্ধার দল। জাসদে কখনোই খন্দকার মোশতাকের মত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ব্যক্তিরা নেতৃত্বে আসাতো দূরের কথা, কোথাও কোনো জায়গাও পায়নি।”
শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহিলা বিষয়ক উপ কমিটির শোক দিবসের আলোচনা সভায় জাসদের গণবাহিনী গঠন নিয়ে কথা বলেন নানক।
তিনি বলেন, “জেনারেল জিয়াউর রহমানরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানতে পারেনি। মোশতাকরা মানতে পারে নাই বলে বাংলাদেশ মুসলিম বাংলা নামে সংগঠন প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৭২ সালে।
এর প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় জোট শরিক জাসদের সাজ্জাদ হোসেন তার বিবৃতিতে বলেন, “জাসদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংসদীয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পথেই অগ্রসর হচ্ছিল। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। সেই নির্বাচনে জাসদের অনেক প্রার্থী বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার পরও জাসদ দলীয় সংসদ সদস্যগণ সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছিলেন।
“তৎকালীন সরকার জাসদের সংসদীয় বিরোধী দলীয় ভূমিকা সহ্য না করে জাসদের উপর চরম রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন-নির্যাতন শুরু করে। ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ জাসদের শন্তিপূর্ণ স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে রক্ষীবাহিনী গুলিবর্ষণ করে হত্যাযজ্ঞ চালায়।”
ওই সময়ের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে জাসদের দপ্তর সম্পাদক বলেন, “এই পরিস্থিতিতে জাসদের সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গণবাহিনী গঠন করতে বাধ্য হয়। গণবাহিনীর সদস্যরা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা।”
“এরা সারাদেশে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। সে সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেদিন বিভাজনের মধ্য দিয়ে গণবাহিনী তৈরি করা হয়েছিল।”
বিবৃতিতে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “জাসদ বরাবরই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনীতি করেছে বলেই ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই জাসদের সাথে ঐক্যের রাজনীতির পথ গ্রহণ করেছিল।
“আওয়ামী লীগ এ পথেই জিয়ার সামরিক শাসন, এরশাদের সামরিক শাসন এবং পরবর্তীতে ২০০৪ সাল থেকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে জাসদের সাথে রাজনৈতিক ঐক্যের পথে এগিয়েছে।”
জাসদের সাথে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ঐক্যকে ‘বিএনপি-জামায়াতসহ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি’ কখনো পছন্দ করেনি মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, “জনাব নানক কি বিএনপি-জামায়াতকে খুশি করতে এবং জনননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় ঐক্যের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতেই এ ধরনের মিথ্যাচার ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রদান করেছেন?”