মাহফুজ ও সজীব সরকারে থাকলে দেশে আগামী নির্বাচন ‘নিরপেক্ষ হবে না’ বলেও শঙ্কা দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁনের।
Published : 18 Mar 2025, 04:31 PM
অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুই ‘ছাত্র উপদেষ্টা’ মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
এই দুই ছাত্র সরকারে থাকলে দেশে আগামী নির্বাচন ‘নিরপেক্ষ হবে না’ বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন কথা বলছিলেন রাশেদ।
অন্তর্বতী সরকারের সমালোচনায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “অভ্যুত্থানের কোনো শক্তি বলে নাই, ছাত্ররা তিন জন উপদেষ্টা হবে। শুরুতে দুইজন উপদেষ্টা হলেন। আর একজন মাহফুজ আলম তিনি তাদের সহযোগিতায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন। এটি একটি চাল ছিল। টেকনিক ছিল। পরে তাকে দপ্তরবিহীন উপদেষ্টা করা হল।
“এরপরে তাকে তথ্য উপদেষ্টা করা হল। তথ্য উপদেষ্টাকে বলা হয়, সরকারের মুখপাত্র। তিনি কখনো হেফাজতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন, কখনো জামায়াতে ইসলামের বিরুদ্ধে, কখনো বিএনপির বিরুদ্ধে, কখনো গণ অধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন। তার দায়িত্ব কি অনৈক্য সৃষ্টি করা?”
৩৬ দিনের যে আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন, তার অগ্রভাবে ছিলেন নাহিদ ইসলাম। তখন তিনি ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান তিনি। এরপর নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম যোগ দেন। এজন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারিতে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
নাহিদ সরে যাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা অন্যতম আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সামলাচ্ছেন স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সমালোচনা করে রাশেদ বলেন, “তিনি (মাহফুজ আলম) যদি এত তাত্ত্বিক জ্ঞান ছড়াতে চান, তাহলে পদত্যাগ করে কেনো জ্ঞানের ভাণ্ডার খুলে বসছেন না? এরকম অনৈক্য সৃষ্টিকারী কি করে সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে বহাল থাকে?"
রাশেদ খাঁনের ভাষ্য, এই দুইজন উপদেষ্টা সরকারে থাকলে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না’।
“কারণ ইতোমধ্যে উপদেষ্টারা তাদের আশীর্বাদ জানিয়েছেন। অন্যান্য উপদেষ্টারা এই ছাত্রদের অনুগত। প্রধান উপদেষ্টা নিজে তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন। সুতরাং এই উপদেষ্টারা সরকারে থাকলে কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।
“আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই দুজন ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হবে। এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে, সেক্টরে যেসব ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, অবশ্যই তাদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। ওয়াসার নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে, এই বিতর্ক আরও আছে।”
সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসানও সরকার থেকে ছাত্রদের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের দল গঠনের মাধ্যমে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। ফলে ছাত্রদের মধ্যে থেকে যারা উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন তাদের পদত্যাগ করতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান।