দেড় মাসের বেশি সময় ধরে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ পালন করে আসা বিএনপি এবার নেতাকর্মীদের নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।
Published : 10 Dec 2023, 10:58 AM
কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি, মানবাধিকার রক্ষা এবং ‘গুম-খুনের শিকার’ ব্যক্তিদের স্বজনদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছে বিএনপি।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ পালন করে আসা বিএনপি এবার টানা কর্মসূচি থেকে সরে এসে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।
রোববার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে বিএনপির মানববন্ধন শুরু হয়, যা এক পর্যায়ে রূপ নেয় বড় জমায়েতে।
মানববন্ধনের এই কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান উপস্থিত হয়েছেন।
এছাড়া দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন ফারুক, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, তাইফুল ইসলাম ইসলাম টিপু, আফরোজা আব্বাস, শিরিন সুলতানা, মীর নেওয়াজ আলী, সুলতানা আহমেদ, রেহানা আখতার রানু, সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়াসহ অনেক নেতারা যোগ দিয়েছেন, যারা দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন।
এই কর্মসূচি রাজধানী ছাড়াও সারাদেশের জেলা সদরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।
বিএনপি ছাড়াও রাজধানীতে সরকার পতনের চলমান যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চ কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অফিসের সামনে; ১২ দলীয় জোট, গণঅধিকার পরিষদ(নূর) বিজয়নগরে পানির ট্যাংকের সামনে; জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পুরানা পল্টনে আল-রাজী কমপ্লেক্সের সামনে; এলডিপি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।
এছাড়া গণফোরাম ও পিপলস পার্টি হাই কোর্টে কদম ফোয়ারার কাছে; গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জাতীয় প্রেসক্লাবের উল্টো দিকে; লেবার পার্টি তোপখানা রোডে মেহরাব প্লাজার সামনে; গণঅধিকার পরিষদ(রেজা কিবরিয়া) পুরানা পল্টনে দলের কার্যালয়ের সামনে; এবি পার্টি বিজয় নগরে ৭১ হোটেলের সামনে আলাদা আলাদাভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি গত বছর থেকে রাজপথে থাকলেও হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির শুরু গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে।
ওই দিন পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হলে পরদিন ২৯ অক্টোর হরতালের ডাক দেয় দলটি। তারপরে ৭২ ঘণ্টার টানা অবরোধের ডাক দেয় তারা। এই কর্মসূচিতে একাত্মতা জানায় তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র দল জামায়াত ইসলামী। এরপর থেকেই ভার্চুয়াল ব্রিফিং করে দফায় দফায় হরতাল, অবরোধের কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি।
সমাবেশ পণ্ডের পরদিন গ্রেপ্তার হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপরে মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ নেতা গ্রেপ্তার হন, বাকিরা চলে যান আত্মগোপনে।
২৯ অক্টোবর থেকে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত মোট ১০ দফায় ২১ দিন অবরোধ ও ৪ দিন হরতাল পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলো। এসব হরতাল অবরোধে সাপ্তাহিক ছুটির দুটি দিন এবং সপ্তাহের মাঝে মঙ্গলবার বিরতি রাখে দলটি। এছাড়া সরকারি ছুটির দিনও কর্মসূচি রাখেনি তারা।
এসব কর্মসূচির দিনগুলোতে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে দিনকে দিন। দূরপাল্লার বাসগুলোও শেষের দিকে ছাড়তে শুরু করে টার্মিনাল থেকে।
এরই মধ্যে আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে নির্বাচনে এসেছে ২৯টি।