ঢাকার নয়াপল্টনে বন্ধ বিএনপি কার্যালয়ের প্রবেশমুখের অংশে ‘ক্রাইম সিন’ লেখা টেপ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে; পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির সদস্যরা দুই ঘণ্টা ধরে আগের দিনের সংঘর্ষের আলামত সংগ্রহ করেছেন।
মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে বিএনপির দলীয় প্রধান কার্যালয় কার্যত ফাঁকাই ছিল। রোববার হরতালের দিন সকাল থেকে সেটি পুলিশের ঘিরে রাখার মধ্যেই সিআইডির সদস্যরা সেখানে আসেন সকাল ১০টার কিছু আগে।
কার্যালয়ের সামনের অংশ ক্রাইম সিন টেপ দিয়ে ঘিরে রেখে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তারা ১০ ধরনের আলামত সংগ্রহ করেন। এসব আলামত পরীক্ষার জন্য কেমিকেল ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সেখানে উপস্থিত সিআইডির সদস্যরা।
ক্রাইম সিন ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা ১০ ধরনের আলামত সংগ্রহ করেছি। এখন এগুলো ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে। কেমিকেল ল্যাব থেকে রিপোর্ট করবে এখানে কী ধরনের এক্সপ্লোশনের উপাদান আছে, বিস্ফোরক আছে তা জানা যাবে।”
কতদিনের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় ল্যাবরেটরিতে যাবে। সময় আমরা বলতে পারব না।“
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের নয় সদস্যের ইউনিটটি নয়াপল্টনের ক্রাইস সিন হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে আলামত সংগ্রহের কাজ করেন।
এর আগে ভোরে কার্যালয়ের প্রবেশমুখের অংশ ‘ক্রাইস সিন’ লেখা হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। কার্যালয়ের প্রধান ফটকও তালা দিয়ে বন্ধ রাখা হয়।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে রাস্তায় পড়ে থাকা ছাই, বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী আলামত হিসেবে সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
এদিকে আগের দিন মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে অনেকটা সুনসান নয়াপল্টন এলাকাসহ বিএনপির দলীয় প্রধান কার্যালয়ের সামনে সকালে পুলিশের অবস্থান বাড়ানো হয়।
কার্যালয়ের দুই পাশে এক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বসিয়ে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। কার্যালয়ের আশপাশে কোনো নেতাকর্মী নেই। সকাল থেকে নয়াপল্টনের সড়কে তাদের কাউকে দেখা যায়নি। তবে কার্যালয়ের সামনে থেকে দুইজনে পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
তবে এদিন সকাল ৬টা থেকে বিএনপির ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতাল শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর নয়াপল্টনের সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেট কার চলাচল করতে দেখা যায়। তবে গণপরিবহনের সংখ্যা কম।
সড়কে যান চলাচলে গতি এলেও নয়াপল্টন সড়কের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রয়েছে। আগের দিন মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের পরও সেগুলো ছিল বন্ধ।
রোববার ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে শুরু করে আশপাশে এখনও থমথম অবস্থা বিরাজ করছে। আগুনের পোড়া গন্ধ থেমে থেমে ভেস আসছে।
বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে শনিবার কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের একপর্যায়ে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পরে হ্যান্ড মাইকে হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ গুলি ছুঁড়ে হামলা করেছে বলেও অভিযোগ দলটির।
আরও পড়ুন