চলমান হরতাল-অবরোধের মধ্যে ‘আত্মগোপনে’ থাকা রিজভীকে এই প্রথম ঢাকার বাইরে দেখা গেল।
Published : 06 Dec 2023, 10:06 AM
স্বৈরাচার এইচ এম এরশাদের মত বতর্মান সরকারের বিদায়ও ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। বিজয়ের মাসেই সরকারের ‘পতন হবে’ বলে তিনি আশা করছেন।
বিএনপি ও সমমনাদলগুলোর ডাকা দশম দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের শুরুর দিন বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় রাজশাহীর তেরোখাদিয়া স্টেডিয়ামের সামনের সড়কে ‘ঝটিকা মিছিল’ শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এমন আশার কথা নেতাকর্মীদের শোনান রিজভী।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। দফায় দফায় হরতাল-অবরোধের মত কর্মসূচি দিয়ে আসছে তারা। বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ শেষ হবে শুক্রবার ভোর ৬টায়।
চলমান হরতাল-অবরোধের মধ্যে ‘আত্মগোপনে’ থাকা রিজভীকে এই প্রথম ঢাকার বাইরে দেখা গেল। এর আগে প্রায় সবগুলো অবরোধের সকালে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রিজভীকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে স্বল্প সময়ের মিছিলের নেতৃত্বে পাওয়া গেছে। সেসব মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখে বরাবর আত্মগোপনে চলে গেছেন রিজভী।
দলের অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ নেতা হয় কারাগারে, নয়ত আত্মগোপনে রয়েছেন। রিজভীই নিয়মিত ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসে দলের কর্মসূচি দিচ্ছেন।
মিছিল শেষে রিজভী বলেন, “নব্বইয়ের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ যেমন জনরোষ থেকে বাঁচতে পারেনি, পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। এই সরকারও জনরোধ থেকে বাঁচতে পারবে না। বিজয়ের মাসেই তাদের পতন গণঅভ্যুত্থানেই ঘটবে।
“জনগণ আজকে জেগে উঠেছে। রাজপথের তীব্র আন্দোলন শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ, ছাত্র-জনতা বিজয় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবে, বাড়ি ফিরে যাবে না।”
সাবেক সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ‘স্বৈরাচারী’ সরকারের পতন হয়েছিল ১৯৯০ সালের এই দিনে। প্রতিবছর এই দিবসটিকে বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক দলগুলো ‘গণতন্ত্র দিবস’ হিসেবে পালন করে। তবে এবারে সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনে থাকায় কোনো আলাদা কর্মসূচি রাখেনি বিএনপি।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রিজভী ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) ভিপি। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতিও ছিলেন তিনি।
‘একতরফা’ নির্বাচন জনগণ হতে দেবে না– এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে রিজভী বলেন, “জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ আবারও একটি পাতানো নির্বাচন পথ ধরে এগুচ্ছে। তারা ভেবেছে এইভাবে ২০১৪ ও ১৮ সালের মতো সাজানো নির্বাচন করে পার পেয়ে যাবে। কিন্তু তা এবার হতে দেওয়া হবে না।“
জনগণ যে কোনো মূল্যে ভোট ‘রুখে দেবে’ বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
রাজশাহীর তেরোখাদিয়া স্টেডিয়াম সড়কে ১৪/১৫ জন নেতা-কর্মীকে নিয়ে রিজভীর মিছিল সিটি হার্ট রোডের ডাবলার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। নেতা-কর্মীরা ‘সারাদেশে অবরোধ চলছেই চলবে’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্টে অ্যাকশন’, ‘তারেক রহমান ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিলে দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী যুব দলের সদস্য সচিব রেজাউল করীম টুটুল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন, শাহনাজ খুরশীদ রিজভী, রনি প্রাং, জেলা ছাত্র দলের আহ্বায়ক শামীম সরকারসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার মত রাজশাহীতেও বক্তব্য শেষে রিজভী আত্মগোপনে চলে যান।