এর আগে সাত দিন হেফাজতে রেখে জামায়াত আমিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ।
Published : 21 Dec 2022, 11:08 PM
জঙ্গিবাদে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. শফিকুর রহমানকে যাত্রাবাড়ী থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় আরও ৩ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
সাত দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার শফিকুরকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে আট দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। মহানগর হাকিম সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আসামির জামিন আবেদনও নাকচ করেন।
এই মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের পরিদর্শক আবুল বাশার জামায়াত আমিরকে আদালতে উপস্থিত করেন। মামলার সুষ্ঠু-তদন্তের জন্য তাকে ফের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়।
এ সময় জামায়াতের আমিরের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক, এস এম কামাল উদ্দিন, শিশির মনিরসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। এ আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই মাহমুদুর রহমান।
এরআগে গত ১৩ ডিসেম্বর শফিকুর রহমানকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। বিচারক সেবার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
জঙ্গি কার্যক্রমে ছেলেকে সহায়তা ও নতুন জঙ্গি দলের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে গত ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাড়ি থেকে শফিকুরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর তার ছেলে রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি।
সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান সে সময় বলেছিলেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার আনসার আল ইসলামের তিন সদস্য আদালতে যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে রাফাতের নাম আসে।
“তারা বলেছে, রাফাত তাদের এই সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত করতে দাওয়াত দিয়েছিল। এই তিনজনসহ প্রায় ১১জন এই রাফাতের দাওয়াতে হিজরতের উদ্দেশে ঘর ছেড়েছিল।”
রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আজাদ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রাফাতকে তিন দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জামায়াত আমির শফিকুর রহমান একসময় তাদের দলের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সিলেট শাখার সভাপতি ছিলেন। তার বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়। ১৯৮৩ সালে তিনি সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড হওয়ার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী এ দলের নেতৃত্বে আসেন শফিকুর। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২০১৭ সাল থেকে তিনি সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১২ সালের নভেম্বরে পান আমির পদ।
গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে ঢাকা-১৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান শফিকুর।