বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির জন্য তারেক রহমান ক্ষমা না চাইলে বা দল থেকে বহিষ্কৃত না হলে ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জনসভা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ।
Published : 21 Dec 2014, 05:55 PM
রোববার দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই দিন একই মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. দেলোয়ার হোসেন ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদুল ইসলাম দীপ।
তৌহিদুল বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তির জন্য বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কিংবা তাকে দল থেকে বহিস্কার করা না হলে ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে বিএনপির ডাকা জনসভা প্রতিহত করা হবে।
“যেখানেই বেগম জিয়ার সভা হবে সেখানেই ছাত্রলীগ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। ২৭ ডিসেম্বরের আগের দিন পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেলে জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।”
বিজয় দিবস উপলক্ষে গত ১৫ ডিসেম্বর লন্ডনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজাকার’ বলেন তারেক।
জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছেলে বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি ৭ মার্চ সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন, তাহলে যে ‘সামান্য সংখ্যক’ পাকিস্তানি সৈন্য তখন ছিল, তাদের সহজেই পরাজিত করা যেত; প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক কমানো যেত।
তিনি দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু ‘পাকবন্ধু’ ছিলেন বলেই এমনটি করেননি। আর সে কারণে তাকে ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করা যায়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধুকে ‘শখের বন্দি’ আখ্যায়িত করে তারেক আরও দাবি করেন, যুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে হানাদার বাহিনীর আঁতাত ছিল।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ছয় বছর ধরে প্রবাসে থাকা তারেক বঙ্গবন্ধু পরিবার এবং স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এর আগেও বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে বেশ কয়েকটি মানহানির মামলার বিবাদী হয়েছেন।
সর্বশেষ বক্তব্যের পর ইতোমধ্যে কয়েকটি মানহানির মামলা হয়েছে তারেকের বিরুদ্ধে। রোববার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও ডজনখানেক, এর মধ্যে ঢাকায় হয়েছে দুটি।
এদিকে ছাত্রলীগের সমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জনসভা করা আমাদের একটি রাজনৈতিক অধিকার। আমি আশাবাদী, দেশের অন্যান্য জেলার মতো আগামী ২৭ ডিসেম্বরে গাজীপুরেও জনসভা সফল হবে।”
এবিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, “বিএনপি চায় ২৭ ডিসেম্বর শোডাউন করবে। অন্যদিকে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে বিএনপির জনসভা না করতে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগও একই দিন শোডাউনের ঘোষণা দিয়েছে বলে আমরা শুনেছি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
২৭ ডিসেম্বর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় খালেদা জিয়ার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে।
অন্যদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কাওসার শেখ কামাল, খন্দকার ফাহিম, হাফিজুর রহমান শ্যামল, গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সায়মান সরকার, মঈনুল হোসেন মোল্লা, যুগ্ম সম্পাদক কাজী মো. সাকির ও ইমরান হোসেন পলিন।