মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় ফুরিয়ে গেলেও রাজনৈতিক সমঝোতা হলে তফসিল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
Published : 02 Dec 2013, 08:38 PM
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে অনড় অবস্থানে থাকা দুই প্রধান দলকে জনগণের মুখের দিকে চেয়ে ছাড় দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
সরকার ও বিরোধী দলের মুখোমুখি অবস্থানে সংঘাত-সহিংসতায় কয়েকটি স্থানে নির্বাচন কার্যালয়ে হামলার মধ্যে সোমবার বিকালে মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয়, যাতে অংশ নেয়নি ১৮ দলের কেউ।
দশম সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হওয়ায় নতুন করে কারো প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে না।
বিরোধী দল মনোনয়নপত্র দাখিল প্রক্রিয়ায় না আসায় তফসিল পরিবর্তনের কোনো সুযোগ রয়েছে কি না- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “সমঝোতা হলে সব কিছুই সম্ভব।”
তার এই বক্তব্যের ঘণ্টাখানেক আগে এক বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সমঝোতার জন্য সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে তফসিল স্থগিতের জন্য ইসিকে আহ্বান জানান তিনি।
দিনভর ব্যস্ত সময় কাটানোর পর রাত ৯টার দিকে কার্যালয় থেকে বের হন কাজী রকিব। বিকাল ৫টায় মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় ফুরানোর আগ মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।
নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে দুপুরে সিইসির সঙ্গে দেখা করেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক নিল ওয়াকার।
বিরোধী দলের কেউ মনোনয়নপত্র জমা না দিলেও আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ এখনো প্রত্যাশা করেন সিইসি। তিনি আশায় আছেন সমঝোতার, আর সেক্ষেত্রে নিজেদের সিদ্ধান্তও বদলাবেন বলে ইঙ্গিত করেন।
জনগণ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশায় আছে- মন্তব্য করে সিইসি বলেন, “আমি এখনো আহ্বান জানাচ্ছি, দুই দলই এগিয়ে আসেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেন। জনগণকে প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ দিন।”
বিএনপি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে হরতাল-অবরোধ করছে। অন্যদিকে ‘সর্বদলীয়’ সরকার গঠন করে নির্বাচনের পথে চলছে আওয়ামী লীগ।
দুই দলকে নিজের অবস্থান থেকে ছাড়া দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, যে কোনো সমঝোতাতে কিছু ছাড় দিতে হবে, দুই পক্ষতে এগিয়ে আসতে হবে।
“তাইলেই তো সমঝোতা। যার যার অবস্থানে অনড় থাকলে সমঝোতা হয় না। এটা সমঝোতার লক্ষণ নয়। আহ্বান জানাই, দুই পক্ষ ছাড় দিয়ে সমঝোতায় পৌঁছবে।”
দুই দলে মতৈক্য হলে ভোটের তারিখ সর্বোচ্চ কতদিন পেছানো সম্ভব- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “সমঝোতা হলে তখন দেখা যাবে। আমরা সব রকম ব্যবস্থা নেব।”
সমঝোতার অপেক্ষা করলে সংবিধান অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করা কি সম্ভব হবে- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “সমঝোতা হলে অনেক কিছুই সম্ভব। দেখা যাক।”
নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৫ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনে তফসিল পরিবর্তনের নজির রয়েছে।