ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী শাহজাহান সিরাজ দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মঙ্গলবার মারা যান।
ছাত্রলীগের এক সময়ের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ জাসদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পর দীর্ঘদিন দলটিতে নেতৃত্ব দিয়ে ১৯৯৫ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে তিনি বন ও পরিবেশমন্ত্রী ছিলেন।
শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুর খবর শুনে মঙ্গলবার রাতে তার গুলশানের বাড়িতে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি লাশবাহী গাড়িতে রাখা কফিনের সামনে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের ছেলে আবেদ আহমেদ।
গুলশানের বাসায় গিয়ে শাহজাহান সিরাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেত্রী শিরিন সুলতানা।
বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, “তার (শাহজাহান সিরাজ) এই চলে যাওয়াটা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করল। এই শূন্যতা পূরণ হবার নয়।
“আমরা জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে, আমাদের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, গভীর শোক জানাচ্ছি এবং আল্লাহ তায়লার কাছে দোয়া করছি, তিনি যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।”
প্রয়াত নেতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “শাহজাহান সিরাজ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধে অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি। শৈশব থেকে কৈশোর এবং ছাত্র অবস্থাতে এদেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছেন, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছেন।
“স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, একদলীয় একনায়ক শাসনের বিরুদ্ধেও তিনি সংগ্রাম করেছেন, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য এবং জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য শাহজাহান সিরাজ সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এদেশের মানুষের কল্যাণের কথাই চিন্তা করেছেন।”
এর আগে মির্জা ফখরুল গুলশানের ২৩ নং সড়কের ২৮ নম্বরের ওই বাসায় গিয়ে প্রয়াত নেতার স্ত্রী রাবেয়া সিরাজের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাকেসহ পরিবারের সদস্যদের সাত্ত্বনা দেন।
এ সময়ের প্রয়াতের মেয়ে শুক্লা সিরাজ ও জামাতা ওমর সাদাত উপস্থিত ছিলেন।