দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দলের সভাপতি কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ‘ধমক’ শুনে বেরিয়ে এলেন গণফোরামের মোকাব্বির খান।
Published : 04 Apr 2019, 06:30 PM
একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার দুদিন বাদে বৃহস্পতিবার বিকালে মতিঝিলে কামালের চেম্বারে গিয়েছিলেন গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির।
কামালের চেম্বারে তখন ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল হুদা মিলু চৌধুরী ও ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ মধু।
মিলু চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোকাব্বির খান সাহেব এসে স্যারকে (কামাল) সালাম দিতেই স্যার চরম রাগান্বিত হয়ে বলেন- ‘আপনি এখান থেকে বেরিয়ে যান, গেট আউট, গেট আউট। আমার অফিস ও চেম্বার আপনার জন্য চিরতরে বন্ধ।”
এই বিষয়ে মোকাব্বির খানের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের নেতাদের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও জোটটির শরিক দল গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুজনই শপথ নিয়ে ফেলেছেন।
মোকাব্বির শপথ নেওয়ার আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দলের ‘সিদ্ধান্তেই’ তিনি এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে গণফোরাম থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে।
শপথ নেওয়া প্রথমজন সুলতান মো. মনসুর আহমেদকে সঙ্গে সঙ্গে গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়। মোকাব্বিরের বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত আসছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সুব্রত চৌধুরী।
সুলতান মনসুর সংসদ নির্বাচনে জোটের বড় দল বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিলেও মোকাব্বির ভোটে জেতেন গণফোরামের দলীয় প্রতীক উদীয়মানর সূর্য নিয়ে।
দুই যুগ আগে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে কামাল হোসেন গণফোরাম গঠনের পর এই প্রথম দলটির কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হল। সংসদ নির্বাচনে গণফোরামের প্রতীকের বিজয়ও এটা প্রথম।
সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন মোকাব্বির। ওই আসনে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় জোটের প্রার্থী হিসেবে রয়ে গিয়েছিলেন মোকাব্বির, পরে ভোটেও জয়ী হন।
ব্যবস্থা হচ্ছে: গণফোরাম
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় মোকাব্বির খানের বিরুদ্ধে ‘জরুরিভা্বে’ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে গণফোরাম।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, “গণফোরাম জরুরিভাবে মোকাব্বির খানের ব্যাপারে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। তার শপথ নেওয়ার ঘটনার সঙ্গে সংগঠনের অন্য কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
মোকাব্বিরের বক্তব্য নাকচ করে মন্টু বলেন, “মোকাব্বির খানের শপথ নেওয়ার বিষয়ে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কিছুই অবগন নন। তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ইচ্ছায় শপথ নিয়েছেন।
“মোকাব্বির খান মিডিয়াতে সভাপতি ও সংগঠনের বিষয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন, যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তার সংগঠন ও আদর্শবিরোধী কার্য্কলাপে গণফোরাম মর্মাহত।”