ত্রাসের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে: ফখরুল

নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীনরা সারাদেশে ‘ত্রাসের পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2019, 03:55 AM
Updated : 5 Jan 2019, 04:56 AM

ভোটের দিন ধর্ষণের শিকার নারী ও তার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে নোয়াখালীর পথে রওনা হয়ে কুমিল্লায় যাত্রাবিরতি সময় সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন তিনি।

শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে সড়ক পথে নোয়াখালী রওনা হন ফখরুলসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। পথে কুমিল্লা সেনানিবাসের কাছে এক রেস্তোরাঁয় যাত্রা বিরতি দেন তারা।

সেখানে ফখরুল বলেন, “একাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বের সহিংসতা, নির্বাচনের দিনের সহিংসতা ও নির্বাচনের পরের সহিংসতার মধ্য দিয়ে আজকে গোটা বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনরা একটা ত্রাস ও ভীতির নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। আমরা দেখেছি নোয়াখালীতে আমাদের একজন বোন ধর্ষিত হয়েছেন।

“আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছি এবং সারাদেশে সর্বত্র যে সহিংসতা হয়েছে, তার নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছি এই সহিংসতা প্রতিরোধ করার।”

ভোটের পরের সহিংসতা রোধে পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

এই ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে ফখরুল বলেন, “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হল আবার।

“এই ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও দেশের প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে এখন গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে।”

এই সফরে ফখরুলের সঙ্গে একই গাড়িতে রয়েছেন নোয়াখালীর ওই আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য, দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

নোয়াখালীর পথে শনিবার সকালে ঢাকায় দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে রওনা হন বিএনপি মহাসচিবসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা

কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, হারুনুর রশীদ, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌথুরী এ্যানি, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় নেতা রেহানা আখতার রানু, সৈয়দ আসিফা আশরাফী পাপিয়া এই সফরে রয়েছেন।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারীর খোঁজ-খবর নেবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা, এরপর জেলার আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বিকালেই ঢাকা ফিরবেন তারা।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর রাতে বাড়িতে হানা দিয়ে অটোচালকের স্ত্রী, চল্লিশোর্ধ্ব ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়; তার সন্তান ও স্বামীকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

ওই নারীর অভিযোগ, ভোটকেন্দ্রে নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জের ধরে তার উপর এই নির্যাতন চালানো হয়।

দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে মানবাধিকার কমিশনের একটি দল এবং পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নোয়াখালী গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

পুলিশ স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে; এর মধ্যে চারজন ওই নারীর করা মামলার আসামি।

নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানকারী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “জাতি হিসেবে এই ঘটনা সবাইকে অত্যন্ত হেয় প্রতিপন্ন করেছে। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এমন ঘটনা কল্পনা করা কঠিন।”