ভোটের রাতে ধর্ষণ: ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটের রাতে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনকে ওই ঘটনার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ বলছে পুলিশ।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2019, 08:06 AM
Updated : 6 Jan 2019, 03:09 AM

গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে হাসান আলী বুলু (৬০) সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের ‘প্রধান সহযোগী’ হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

আর জসিম উদ্দিন (৩০) সুবর্ণচরের চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মোতাহের হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কলা বিক্রেতা।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন, মামলার এজাহারে বুলু বা জসিমের নাম ছিল না। তবে পুলিশ তদন্তে  নেমে ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পায়।

দুজনের মধ্যে জসিমকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রামের নাজিরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে চরজব্বার থানা পুলিশের একটি দল।

পরে চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হাসান আলী বুলুকে।

গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের রাতে সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে ওই ধর্ষণের ঘটনার পর এ পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, চারজন ইটভাটা শ্রমিক।

জসিম উদ্দিন

মামলার অপর আসামিদেরকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে চরজব্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল জানিয়েছেন।

ধর্ষণের শিকার ওই চল্লিশোর্ধ নারীর অভিযোগ, ভোটের সময় নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এরপর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গপাঙ্গরা’ বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।

পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ বিডিনিউজ টেয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাসান আলী বুলু ওই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। ভোটকেন্দ্রে তার সঙ্গেই ওই নারীর ঝামেলা হয়েছিল। পরে সে দশ হাজার টাকায় কয়েকজন ইটভাটা শ্রমিককে ভাড়া করে।”

চরজব্বার থানায় ওই নারীর স্বামীর দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা তার বসতঘর ভাংচুর করে, ঘরে ঢুকে বাদীকে পিটিয়ে আহত করে এবং সন্তানসহ তাকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে।

মামলার এজাহারে মোট নয়জনকে আসামি করা হলেও সেখানে চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য রুহুল আমিনের নাম না থাকায় বুধবার রাতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে হতাশা প্রকাশ করেন ওই নারী।

এরপর সেই রাতেই জেলা সদরের একটি হাঁস-মুরগীর খামার থেকে রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তবে রুহুল আমিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কারের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী এখন নোয়াখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডাক্তারি পরীক্ষায় তাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে জানিয়ে ইতোমধ্যে প্রতিবেদন দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।