ক্ষমতায় গেলে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাত দিনের মধ্যেই বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএনপি।
Published : 30 Sep 2018, 08:10 PM
আইনটি প্রণয়নের পর থেকে সমালোচনা করে আসা বিএনপি নেতারা রোববার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় এই প্রতিশ্রুতি দেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, “আজকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে বাক স্বাধীনতার উপর চরম আঘাত হানা হয়েছে। এটি জঘন্যতম কালো আইন। এই আইনের ধারা ৮, ২১, ২৫,২৮, ২৯, ৩১ , ৩২ ও ৪৩ সবগুলো ধারা সংবিধান পরিপন্থি।
“আমি স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, আমরা ক্ষমতায় গেলে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাত দিনের মধ্যে বাতিল করে দেব। কারণ আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।”
তথ্য প্রযুক্তি আইনের পর সদ্য প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কড়া সমালোচনা করে আসছে গণমাধ্যম সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোর নেতারা।
ডিজিটাল জগতে বিচরণে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় এই আইনটি করা হয়েছে বলে সরকার বললেও সম্পাদকরা বলছেন, এই আইনের কয়েকটি ধারা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পথ রুদ্ধ করে দেবে।
আইনটির ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা নিয়ে আপত্তির কথা রোববার এক বৈঠকে সরকারকে জানিয়েছেন সম্পাদকরা। এগুলো নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এই আইনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মওদুদ বলেন, “গণমাধ্যমের ভাই-বোনেরা আজকে সময় এসেছে আপনাদের জেগে উঠবার। ঐক্যবদ্ধভাবে আপনারা এটাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করুন। সরকারকে বাধ্য করুন এই আইন বাতিল করার জন্য।”
আইনটির ৩২ ধারা তুলে ধরে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, “সরকারের দুর্নীতি ও অপকর্মের কোনো নথিভিত্তিক খবর যদি বের করেন, আপনাদেরকে (সাংবাদিক) ১৪ বছরের সাজা দেওয়া হবে এবং ২৫ লক্ষ টাকার জরিমান করা হবে।
“এই আইনে পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যেটা রক্ষীবাহিনীকেও দেওয়া হয় নাই। পুলিশ যে কোনো অফিসে, যে কোনো বাড়িতে, যে কোনো সময়ে প্রবেশ করতে পারবে বিনা ওয়ারেন্টে। এটা কী মানা যায়?”
মওদুদ বলেন, “এই আইনটি করা হয়েছে নির্বাচনের আগে যাতে সংবাদপত্রগুলো এই সরকারের অপকর্ম ছাপাতে না পারে। কিন্তু দেশের মানুষের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না। আমি বিশ্বাস করি, সংবাদপত্র সরকারের অপকর্ম প্রকাশে দ্বিধা বোধ করবে না।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এই জনসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ৭ দফা তুলে ধরেছে বিএনপি।