আওয়ামী লীগ ছাড়া জাতীয় ঐক্য হয় না- ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাকেও এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
Published : 24 Sep 2018, 06:27 PM
তবে এক্ষেত্রে শর্ত দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে হলে পাঁচ দফা মেনে নিতে হবে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে জনমত গঠনে সম্প্রতি একজোট হন একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও কামাল হোসেন।
তাদের এই ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র সমাবেশে গত শনিবার যোগ দিয়ে বিএনপিও তাতে সহমত জানালে তার প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমমতাসীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেছিলেন, তাদের ছাড়া জাতীয় ঐক্য হয় না।
সেই প্রসঙ্গ ধরে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় মোশাররফ বলেন, “জাতীয় ঐক্য হচ্ছে জনগণের দাবিগুলোকে নিয়ে, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে, ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
“ ‘সেই পাঁচটি দফা যেমন- আগামী নির্বাচনের তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া, সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ইভিএম বাদ, সামরিক বাহিনী মোতায়েন এসব বিষয়ে জনগণের সাথে একমত হয়ে ঘোষণা দিলে আমরা আপনাদেরকে জাতীয় ঐক্যে অন্তর্ভুক্ত করব, আমরা আপনাদেরকে স্বাগত জানাব।”
তবে এই পাঁচ দফা মানার কোনো ইচ্ছা ক্ষমতাসীনদের মধ্যে দেখতে পাচ্ছেন না বিএনপি নেতা মোশাররফ।
“এটা উনি (ওবায়দুল কাদের) কথার কথা বলেছেন। তারা এটা পারবে না। তাদের সেই মানসিক শক্তি নাই, তাদের সেই সাহসও নাই। জনগণকে মোকাবেলা করার সাহস তাদের নেই।
‘‘সেজন্য তারা (আওয়ামী লীগ) আজকে ষড়যন্ত্র করছে জোর করে কীভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, অলিখিত বাকশাল দীর্ঘায়িত করার জন্য।”
তবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সরকারকে দাবি পূরণে বাধ্য করার হুঁশিয়ারিও দেন মোশাররফ।
সংসদে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘কালো আইন’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে এই কালো আইন করেছে। মিডিয়া এখন যতটুকু আমাদের কথাবার্তা প্রকাশ করতে পারে, এই কিছু স্বাধীনতা আছে, ন্যূনতম সেই স্বাধীনতাকেও খর্ব করার জন্য দেওয়ার জন্য, মুখে তালা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আজকে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে।”
‘ভৌতিক’ মামলা দিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের দমন করার নীতির সমালোচনা করে মোশাররফ বলেন, ‘‘সরকার কেন এই মামলা দিচ্ছে? ভয়ে। বেগম খালেদা জিয়াকে কেন কারাগারে আটকিয়ে রেখেছে? ভয়ে। গায়ের জোরে এই সরকার এসব করছে শুধু নির্বাচনকে সামনে রেখে।
‘‘দেশে এক ভয়াবহ ও বিস্ফোরণমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে এই সরকার। যেখানে নির্বাচনের আগে সকল দলকে সমান সুযোগ করে দেওয়া হয় সেখানে আওয়ামী লীগের যারা প্রতিদ্বন্দ্বী তাদের সবাইকে বন্দি করে তারা নির্বাচন করবে। এটা হাস্যস্পদ, এটা অসম্ভব।”
২০১৪ সালের মতো নির্বাচন এবার হতে দেওয়া হবে না বলেও সরকারকে হুঁশিয়ার করেন ওই নির্বাচন বর্জনকারী দল বিএনপির এই নেতা।
নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে খালেদা জিয়া ও হাবিব-উন নবী খান সোহেলের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মোশাররফ।
সংগঠনের সভাপতি সাঈদ হাসান মিন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুন রায় চৌধুরী এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।