পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সবাই ‘স্বাধীনতাবিরোধী, অছাত্র ও মাদকাসক্ত’ বলে অভিযোগ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদ এ কে এম এ আওয়াল।
Published : 05 Aug 2016, 08:49 PM
শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। আমি ছাত্রজীবনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলাম। আর আমার জেলার কমিটি গঠিত হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। এই কমিটিতে প্রায় সবাই স্বাধীনতাবিরোধী, অছাত্র, খুনি, মাদকাসক্ত ও দোকানদার। এটি কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর তৈরি ছাত্রলীগ হতে পারে না।”
গত ২০ জুন পিরোজপুর জেলায় এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
কমিটির সহ-সভাপতি রাজু পৌর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেলের ছেলে বলে দাবি সাংসদ আওয়ালের।
তিনি বলেন, “জামায়াতের সাঈদী (দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) আমার আসনের। আমি তাকে নির্বাচনে পরাজিত করেছি। তাছাড়া যুদ্ধাপরাধে তার রায়ের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ আমার জেলায় হতে দিইনি।
“এগুলো নিয়ে জামায়াত-ছাত্রশিবিরের ক্ষোভ রয়েছে। এই ক্ষোভ মেটানোর জন্য বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করে তারা ছাত্রলীগের কমিটিতে ঢুকেছে।”
তার এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনার (এমপি) লোকদের কমিটিতে ঢোকাতে না পেরে এ ধরনের কথা-বার্তা বলছেন। উনি চাইছিলেন, উনি যেভাবে চান ছাত্রলীগ সেভাবে চলবে। কিন্তু বর্তমান কমিটি উনার ‘গ্রিপের’ বাইরে। সেজন্য এসব বলে বেড়াচ্ছেন।”
পুরো কমিটির তালিকা ধরে সবার বিরুদ্ধে অভিযোগের খতিয়ানও সংবাদ সম্মেলনে হাজির করেছেন সাংসদ আওয়াল।
জামায়াত নেতার ছেলেকে কমিটিতে রাখার যে দাবি সাংসদ করেছেন সে বিষয়ে জাকির বলেন, “এসব ভুয়া কথা।”
সংবাদ সম্মেলনে নিজের এলাকায় দায়িত্বরত সরকারি কর্মকর্তাদেরও সমালোচনা করেন এ কে এম এ আওয়াল।
তিনি বলেন, “পিরোজপুর জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের কার্যকলাপ ভালো না। তাদের কাছে মানুষ কোনো সুবিচার পায় না। কর্মকর্তারা সরকারদলীয় লোকদের সাথে ব্যবহার খারাপ করেন কি না সেটা দেখার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, কোনো সামাজিক, উন্নয়নমূলক কাজসহ কোনো ‘লিগ্যাল’ কাজের জন্য তারা এগিয়ে আসে না।”
ওই এলাকায় নতুন করে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে এই সাংসদ বলেন, “সম্প্রতি আমার নির্বাচনী এলাকায় সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। আমি সাত বছরের মধ্যে যা হতে দিইনি তা এখন আবার শুরু হতে চলেছে। আমি প্রশাসনের কোনো ধরনের সহযোগিতা পাই না।”
বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি জানিয়েছি, তারা বলেছেন ‘দেখব’।”