আর মার খেতে রাজি নই: ফখরুল

“এই সরকার যদি আবার আসে, তাহলে এদেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না, জাতির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না,” বলেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2023, 12:51 PM
Updated : 26 Feb 2023, 12:51 PM

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাইলে তা রুখে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘‘ এই নির্বাচন(জাতীয় নির্বাচন) তারা(সরকার) করতে চায় আবার আগের মতো। আবার আগের মতো ভোট লুট করে নিয়ে যাবে, চুরি করে নিয়ে যাবে। আমরা কি সেই নির্বাচন করতে দেব? আমরা কি রুখে দাঁড়াব?

“রুখে দাঁড়াব। আমাদের অস্তিত্বের জন্য, আমাদের অধিকারের জন্য, আমাদের বাংলাদেশেকে রক্ষা করবার জন্য, বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করবার জন্য আমাদের আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা বারবার মার খাচ্ছি- বাংলাদেশের মানুষ। এবার আর মার খেতে রাজি নই।”

রোববার বিকালে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে নবাবগঞ্জে পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার যদি নিরপেক্ষ থাকত, আপনার ভোট আপনি দিতে পারতেন। যাকে খুশি তাকে দিতে পারতেন। এখন কি সেটা হয়? হয় না। এখন ওদের (সরকার) কথা হচ্ছে- আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব।

“এজন্য এখন মানুষ বলতে শুরু করেছে, আগে যদি জানতাম তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। এই নৌকা মানুষ নেবে না। কারণ এই নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগ এদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। চুরির শেষ নাই… এবং কাজ না করে টাকা নিয়ে চলে যায়। আর ১০ টাকার জিনিস ১০০ টাকা বিল করে নিয়ে চলে যায়।”

উন্নয়নের নামে লুটপাট করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু করেছে খুব ভালো। কিন্তু পদ্মা সেতুর ১০ হাজার কোটি টাকায় ৩০ হাজার কোটি টাকা করেছে। আর পাতাল রেলে করে কী কী করে? উন্নয়নের নদী বয়ে যাচ্ছে।

“কিন্তু উন্নয়নে সাধারণ মানুষের উপকার হচ্ছে না। এই সরকার যদি আবার আসে, তাহলে এদেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না, জাতির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।”

“এরা ফুলে ফুলে সব কলা গাছ হয়ে গেছে। যার পায়ে স্যান্ডেল ছিল, সে এখন বিরাট গাড়ি চালায় এবং বড় বড় বাড়ি তৈরি করেছে সব আওয়ামী লীগের লোকেরা; এই বাংলাদেশের মানুষের রক্ত চুষে নিয়ে, ট্যাক্স চুরি করে নিয়ে,” বলেন তিনি।

নবাবগঞ্জ শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে বেলা আড়াইটায় শুরু হয়ে দুই কিলোমিটার পদযাত্রা করে বাগমারার কোর্ট ভবনের সামনে শেষ হয়।

ঢাকা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির শিরিন সুলতানা, দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন, তমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ।

গ্যাস-বিদ্যুৎ-নিত্যপণ্যে দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপি সারাদেশে জেলায় জেলায় ২৫ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা করে। ঢাকা জেলায় এ কর্মসূচি হলো রোববার।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আর বক্তব্য নয়। এখন আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে সোচ্চার হয়ে সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, আমরা ১০ দফা দিয়েছি.. তোমরা অবিলম্বে পদত্যাগ করো, সংসদকে ভেঙে দাও এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দাও।

“সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটা নিরপেক্ষভাবে একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করবে, সেই কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে, জনগণ সেখানে ভোট দেবে। যার ভোট সে দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে। সেখানে যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে আসে আসুক- আপত্তি নাই। কিন্তু জনগণের ভোটে আসতে হবে।”

সরকার পতনে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, “আমরা এই সংগ্রাম আমরা শুরু করেছি বাংলাদেশকে রক্ষা করবার জন্য, বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করবার জন্য। তাই আসুন আমরা বিশেষ করে তরুণ যুব সমাজকে আহ্বান জানাব, বাংলাদেশে যত পরিবর্তন হয়েছে, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৯০ আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ সব কিছু তরুণ যু্বকরা করেছে।

“তরুণদের বলব, এগিয়ে আসুন। পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে হবে, পরিবর্তন করতে হবে। গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকার যারা আমাদের সমস্ত অর্জনকে ধবংস করে দিয়েছে, তাদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।”