পুলিশ সদস্যরা গত চারদিনের মতই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন।
Published : 02 Nov 2023, 12:42 PM
ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্বাচন কমিশন যে চিঠি পাঠিয়েছিল, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবন্ধ থাকায় তা ফেরত গেল।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা মো. মহসিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ওই চিঠি নিয়ে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। কিন্তু বাইরে সতর্ক পাহারায় থাকা পুলিশ সদস্যা তাকে থামিয়ে বলেন, অফিস বন্ধ, ভেতরে কেউ নেই।
পরে ওই ইসি কর্মকর্তা কার্যালয়ের পাশে হোটেল ভিক্টোরিয়াতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি টেলিফোনে বিএনপির অফিস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপিসহ ৪৪টি নিবন্ধিত দলের সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিবকে এই চিঠি দিচ্ছে ইসি।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে শনিবার সকালে ও বিকালে দুই ভাগে ২২টি করে দলের সঙ্গে এই সভা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বরাবরে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, “আগামী ৪ নভেম্বর বিকাল ৩টায় নির্বাচন কমিশন ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হবে। এতে আপনার দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক মনোনীত দুইজন প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার অনুরোধ জানিয়েছেন।”
কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দু’দফা সংলাপে বিএনপিসহ কয়েকটি দল অংশ নেয়নি। সে কারণে বিএনপি ও সমমনা দল এবং সিপিবি, বাসদসহ সংলাপ বর্জন করা ৯ দলকে গত মার্চে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তাতেও সাড়া দেয়নি দলগুলো।
গত ২৮ অক্টোবর কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পরদিন রোববার হরতাল ডাকে দলটি। এরপর মঙ্গলবার থেকে ডাকা হয় তিন দিনের অবরোধ। বিএনপি মহাসচিবসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতা ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
শনিবারের ওই সংঘর্ষের পর নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে পাহারা বসায় পুলিশ। কার্যালয়ের পাশের ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলও বন্ধ করে দেওয় তারা।
২৯ জুলাই সিআইডির ক্রাইস সিন ইউনিট বিএনপি অফিসের সামনে থেকে ১১টি আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠায়।
বৃহস্পতিবার বিএনপির ডাকা অবরোধের তৃতীয় দিন নয়া পল্টনে গিয়ে দেখা যায়, দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং সড়কের আইল্যান্ডে থাকা বড় বড় ব্যানার-ফেস্টুনগুলো আর নেই। সিটি করপোরেশনের লোকেরা রাতে এসে সেগুলো খুলে নিয়ে গেছে বলে স্থানীয় কয়েকজন জানান।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের চারদিকে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো নতুনভাবে লাগানো হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষের সময় কিছু সিসিক্যামেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
পুলিশ সদস্যরা গত চারদিনের মতই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন। কার্যালয়ের সামনের ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না, তাদের রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হচ্ছে।
কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আসা বিভিন্ন চিঠি কলাপসিবল গেইটের ভেতরে চেয়ারে রেখে যাচ্ছেন কুরিয়ার কর্মীরা।