বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব আর নেই

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সভাপতি এভারকেয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2022, 06:02 PM
Updated : 31 Dec 2022, 06:02 PM

প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বেশ কিছুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার রাত পৌনে ১১টায় তার মৃত্যু হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।

খন্দকার মাহবুবের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির একাধিকবারের সভাপতি এবং বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের মামলা লড়েছেন তিনি।

এভারকেয়ার হাসপাতালে গত কয়েকদিন থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন প্রবীণ এই আইনজীবী। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে অধ্যাপক জাহিদ জানান, লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার কোনো উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকরা মৃত্যু ঘোষণা করেন।

পরিবারের সদস্যরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রক্তচাপ নেমে যাওয়ায় বুধবার বিকালে চিকিৎসকরা খন্দকার মাহবুবকে ভেন্টিলেটরে রাখার সিদ্ধান্ত দেন।

প্রবীণ এই আইনজীবী হৃদরোগ, রক্তচাপ ও কিডনি জটিলতাতেও ভুগেছিলেন।

স্ত্রী ফারাত হোসেনসহ দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।

খন্দকার মাহবুবের জন্ম ১৯৩৮ সালের ২০ মার্চ বরগুনার বামনায়। বরগুনায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর উচ্চ মাধ্যমিকে পড়েন নারায়ণগঞ্জে। তখনই ভাষা আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে বন্দি হয়েছিলেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জ থেকে ম্যাট্রিক পাস করে তিনি ভর্তি হন ঢাকার নটর ডেম কলেজে। ১৯৫৮ সালে পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে। তখন আইয়ুববিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন তিনি।

১৯৬৪ সালে এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে আইন পেশায় যোগ দেন তিনি। ১৯৬৬ সালে তিনি হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

স্বাধীনতার পর দালাল আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আদালতের চিফ প্রসিকিউটর ছিলেন খন্দকার মাহবুব। তবে চার দশক পর একাত্তরের যুদ্ধারাধের বিচারের সময় বিপরীত অবস্থান নেওয়ায় সমালোচিতও হন তিনি। 

দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার আত্মীয় হওয়ায় রাজনীতিকদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বরাবরই ছিল। তবে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন ২০০৮ সালে, বিএনপিতে।

তিনি চার বার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

রাজনীতির পাশাপাশি সমাজসেবামূলক নানা কাজে যুক্ত ছিলেন খন্দকার মাহবুব।

অন্ধ ও পঙ্গুদের জন্য ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ভিটিসিবিরর ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ছিলেন তিনি। শিশু সংগঠন কচিকাঁচার উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। ওয়ার্ল্ড ব্লাইন্ড ইউনিয়ন, এশিয়ান ব্লাইন্ড ইউনিয়ন ও ঢাকা রোটারি ক্লাবের সদস্য ছিলেন তিনি।