দলটির আলোচনায় অর্থনীতিবিদ তাজুল ইসলাম বলেন, “কৃষিতে মোট বাজেটের ২৭ শতাংশ, স্বাস্থ্যে ৭ শতাংশ ও শিক্ষায় ১০ শতাংশ হওয়া উচিত।”
Published : 15 May 2024, 06:41 PM
উৎপাদন খাতকে শক্তিশালী করতে আগামী বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, সিপিবি।
বুধবার রাজধানীর পল্টনে দলটির প্রধান কার্যালয় মুক্তি ভবনে আয়োজিত সভায় এই দাবি জানানো হয়। এতে নানা শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেয়।
‘বাজেট; গণমানুষের ভাবনা’ শীর্ষক দলটির সিপিবির আলোচনায় সভায় অর্থনীতিবিদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রকৃত উৎপাদন খাত হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় এখানে বাজেটে সব সময় বরাদ্দ কমানো হচ্ছে।”
তার মতে, কৃষিতে মোট বাজেটের ২৭ শতাংশ, স্বাস্থ্যে ৭ শতাংশ ও শিক্ষায় ১০ শতাংশ হওয়া উচিত।
তৈরি পোশাক খাতের কর্মী সোমা ইসলাম বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতির যে সমস্যা তাতে শ্রমিকদের রেশন দিতে হবে। শ্রমিক যদি ভালো না থাকে তাহলে শিল্প কীভাবে ভালো থাকবে?’’
কৃষক হাতেম আলী বলেন, ‘‘জমি আমার, ফসল আমি ফলাই। সেই ফসলে অন্যরা ব্যবসা করে, আর আমি অভুক্ত থাকি। ফসলের দাম পেতে বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে।’’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মুশতাক হোসেন বলেন, ‘‘২০১৬ সালে যেখানে পাঁচ লাখ লোক ভারতে যেত চিকিৎসার জন্য, ২০২৩ সালে এসে তা ২৫ লাখ হয়েছে।
“চিকিৎসা খাত ব্যবসায়ী ও বিদেশিদের হাতে চলে গেছে। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? নৈরাজ্য বন্ধ করতে বাজেটে খাতওয়ারি বরাদ্দ রাখতে হবে।’’
স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি না হওয়ায় গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে ঢাকায় আসতে হয় জানিয়ে মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘‘পরিবহন খাতে বাজেটে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর গ্রামের মানুষ ঋণ করে চিকিৎসা করছে। কিস্তি ফেরত না দিতে পেরে সহায় সম্বলহীন হয়ে ঢাকার বস্তিতে উঠছে গ্রামের মানুষ।’’
উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটানো প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করে অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ বলেন, ‘‘দেশের অর্থনৈতিক সমস্যাটি মূলত রাজনৈতিক, এটি আর অর্থনীতিতে নেই। অর্থনৈতিক এ সংকট কাটাতে রাজনৈতিক নেতৃত্বে বদল আনতে হবে। যারা আছেন, তারা অর্থ পাচারের মত ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।
‘‘অসৎ আমলা, অসৎ রাজনীতিবিদ ও অসৎ ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করছে সবকিছু। সেখানে সাধারণ মানুষের কথা নেই।’’
প্রবাস আয় না আসা ডলার সংকটের প্রধান কারণ উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, “একদিকে সব বৈধ আয় দেশে আসছে না, অন্যদিকে দেশের ভেতরে বৈধ ও অবৈধভাবে গড়া সম্পদ পাচার হয়ে যাচ্ছে। এতে ডলার সংকট কাটবে না।’’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘‘যতদিন গণমানুষের কথা প্রতিফলিত না হবে ততদিন বাজেটের সুফল একটি শ্রেণিই পাবে।’’
সভাপতির বক্তব্যে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলকেই গণমানুষের কথা ভাবতে হয়। সেটি যদি না হয়, তাহলে ভিন্ন শক্তি ক্ষমতায় আসবে। তারা প্রগতিশীল হবে কি না তা বলা যায় না।’’