“সারা দেশে এ কর্মসূচি পালনের জন্য যুগপৎ আন্দোলনের সব দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি,” বলেন মির্জা ফখরুল।
Published : 16 Jul 2024, 11:05 PM
কোটাবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিএনপি ও যুগপতের সমমনা দলগুলো বুধবার সারা দেশে গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি দিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “আজকে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল রাজনৈতিক দল আগামীকাল (বুধবার) বাদ জোহর বায়াতুল মোকাররম মসজিদে গায়েবানা জানাজায় অংশ নেবে।”
“একই সঙ্গে আমরা সারা দেশে এ কর্মসূচি পালনের জন্য যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
‘এই ঘটনার দায় সরকার ও সরকারি দলের’
ব্রিফিংয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর একটি যৌথ ঘোষণা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, “আমরা মনে করি, এই সমুদয় ঘটনার পুরো দায়-দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলের। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যেভাবে উস্কানি সৃষ্টি করা হয়েছে, ছাত্রলীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ যৌক্তিক আন্দোলন মোকাবেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা গত দুই দিনের সমগ্র ঘটনার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।”
কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে চলমান পরিস্থিতিকে ‘পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ হিসেবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করে বলতে চাই, দমন-পীড়ন ও সহিংসতা চালিয়ে সরকার আজ এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, গণমাধ্যমে প্রকাশিত শতাধিক সরকার দলীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়নি। আমরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”
যৌথ ঘোষণায় দাবি করা হয়েছে, মঙ্গলবার যে আন্দোলনকারীরা নিহত হয়েছেন, তারা পুলিশের গুলিতে ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের সঙ্গে আহতদের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানানো হয়েছে। আহত সাংবাদিকদের প্রতিও সহানুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে।
অবিলম্বে কোটা আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল শিক্ষার্থীদের এই ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে দেশাবাসীকে সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের মধ্যে মঞ্চের সমন্বয়কারী ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সম্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে বিএনপির নেতারা গত পাঁচ দিনে যুগপৎ আন্দোলনের গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, গণফোরাম, পিপলস পার্টি, এনডিএ, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশ, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছে।