বিএনপির সঙ্গে সংলাপ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু যে বক্তব্য রেখেছেন, তাকে কেন গুরুত্ব দিতে হবে, সে প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তার যুক্তি হল, আমু ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র কি না, সেটি তার জানা নেই। তাই তার এ বিষয়ের বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার মানে হয় না।
বুধবার বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন ফখরুল।
তিনি গণমাধ্যমের সামনে এসেছিলেন ২০২৩-২৪ সালের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরতে। এ সময় সংলাপ বিষয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন।
জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়টা (আমুর বক্তব্য) গুরুত্ব দিতে চাই না। এ নিয়ে আমি কথাও বলতে চাই না।
“উনি আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল স্পোকসম্যান কি না এটা আমি জানি না। আমরা উনার বক্তব্যকে গুরুত্ব দেব কেন? আই ডোন্ট মেক এনি কমেন্ট।”
সংলাপ নিয়ে হঠাৎ যত কথা
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যখন মুখোমুখি, সে সময় হঠাৎই সংলাপ প্রসঙ্গটি এসেছে।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের সমাবেশে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা বলেন আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, “আসুন, গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমরা আপনাদের সঙ্গে বসতে রাজি আছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দ্বার খোলা। তিনি বলেছেন, যে কোনোভাবে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে তিনি প্রস্তুত।
“আমরা বলতে চাই, বিগত সময়ে জাতিসংঘ যেভাবে তারানকো সাহেবকে পাঠিয়েছিলেন। আামাদের দুই দলকে নিয়ে এক সঙ্গে বসে মিটিং করেছিলেন। আজকেও প্রয়োজনে এই ধরনের দলাদলি না করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক।”
আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই। কোথায় ফারাক? সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনে বাধা কোথায়? কীভাবে সেটা নিরসন করা যায়। এটা আলোচনার মধ্য দিয়েই সুরাহা হতে পারে। অন্য কোনো পথে নয়।”
যদিও বুধবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই বিষয়টি নাকচ করেছেন। এক আয়োজনে তিনি বলেন, “আলোচনার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের নিজেদের সমস্যা আমরা আলোচনা করব, প্রয়োজন হলে নিজেরাই সমাধান করব।”
আর ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, “আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্ত্যবটি দিয়েছেন সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য।… এটি দল, সরকার এমনকি ১৪ দল কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।”
আমু নিজেও দিয়েছেন নতুন বক্তব্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এক আলোচনায় তিনি বলেছেন, “আলোচনার জন্য কাউকে বলা হয় নাই, কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয় নাই। কাউকে আহ্বান করা হয় নাই। কাউকে আহ্বান করার সুযোগ নাই। এটা আওয়ামী লীগের বাড়ির দাওয়াত নয় যে দাওয়াত করে এনে খাওয়াব।”
শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করলেও এবার তিনি কোনো ধরনের আলোচনার ঘোর বিরোধী। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো নির্বাচন হবে না, এটি তার অবস্থান।