“বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিনী ও নিরীহ পথচারী, তারা কী সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।”
Published : 29 Jul 2024, 06:44 PM
ডিবি কার্যালয়ে ‘নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটক’ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
সোমবার জাতীয় পার্টির এক বিবৃতিতে ছাত্রনেতা মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুমের মুক্তির দাবি করা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই ছয়জন সমন্বয়ককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে এনে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে।
শুরুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা না হলেও রাতে গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ‘নিরাপত্তাহীনতার’ কারণে তাদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে।
ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় রোববার এক ভিডিও বার্তায় তারা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের মূল দাবি পূরণ হওয়ায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েকদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সাথে দেখা পর্যন্ত করতে দেয়া হচ্ছেনা।
“বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি... স্বজনদের মাঝে মারাত্মক উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে তারা। সাধারণ ছাত্ররা মনে করছে, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে। নিরাপত্তার নামে আটকে রাখাকে আমরা আইনসম্মত মনে করি না।”
আন্দোলন দমাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালাতে পারে না মন্তব্য করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, “অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সহিংসভাবে মোকাবেলা করার অধিকার সরকারের নেই। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না।”
ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ‘বৃষ্টির মত গুলি ছুড়েছে’ অভিযোগ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এই ধরণের প্রক্রিয়ায় কি সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিনী ও নিরীহ পথচারী, তারা কী সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।”
আন্দোলন দমাতে সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে উল্লেখ করে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতংক বিরাজ করছে।
আন্দোলনে হতাহত এবং সহিংসতার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন তিনি।