“আশা করি, নতুন এই দলের হাত ধরে তৈরি হবে এক নতুন বাংলাদেশ,” বলেন একজন।
Published : 28 Feb 2025, 12:27 PM
‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের’ কথা বলে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’।
শুক্রবার বিকালে ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এই দলের 'আত্মপ্রকাশ' ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
এই আয়োজনে 'বড় জমায়েতের লক্ষ্য' নিয়ে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনের সড়কে ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ।
এদিন সকাল থেকে চলছে মঞ্চ, সামনের সড়ক ও ফুটপাতের শেষ মুহূর্তের কর্মযজ্ঞ। মঞ্চের পাশাপাশি বিভিন্ন বুথ নির্মাণেরও কাজ প্রায় শেষের দিকে।
ছাত্রদের এই জমায়েতে মেডিকেল টিম, ওয়াশরুম, পুলিশ বুথ, পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঞ্চের পেছনে নারীদের জন্য পৃথক বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ভিআইপিদের জন্য মঞ্চের সামনে রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
এই ‘ঐতিহাসিক মুহূর্তের’ সাক্ষী হতে সকাল থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেছেন ছাত্র-জনতা। নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
খুলনা থেকে ৩০টি বাসে করে প্রায় ১২০০ মানুষ এসেছেন। খুলনার তেরখাদা এলাকার বাসিন্দা আবু জার বলেন, “রাত ২ টার দিকে রওনা দিয়ে আমরা সকালেই চলে এসেছি।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের 'শুরু থেকেই' সক্রিয় থাকা এ ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীর আশা, নতুন দলের মাধ্যমে বাংলাদেশে 'ভালো কিছু হবে।'
একইসঙ্গে এই জমায়েতে যোগ দিতে আসা আরেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হেদায়েত বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা নতুন দল সুন্দর একটা রাষ্ট্র গড়ুক। এটা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
রংপুর থেকে তিন বাসে ১৩৫ জন আসা ছাত্র-জনতার একজন রাজু আহম্মেদ৷
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছরে অনেক রাজনৈতিক দল আমাদের দেশে হয়েছে। কিন্তু তারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এই প্রথমবার তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে৷
“আশা করি, তারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে এবং জনগণের জন্য কাজ করবে। নতুন এই দলের হাত ধরে তৈরি হবে এক নতুন বাংলাদেশ।”
সড়কের ওপর মঞ্চ তৈরি করায় মিরপুর সড়কের আড়ং থেকে খামারবাড়ীমুখী রাস্তা বন্ধ রয়েছে। আড়ং মোড়েই ব্যারিকেড দিয়ে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ তবে খামারবাড়ি থেকে আড়ং অভিমুখী রাস্তা খোলা রয়েছে৷
জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষে মুশফিক উস সালেহীন জানিয়েছেন, বেলা ১২টার পর কেবল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ (আড়ংয়ের দিকে) দিয়ে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা যাবে। দুপুর আড়াইটার মধ্যে মঞ্চের সামনের 'সংরক্ষিত এলাকায়' প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলটির নেতা কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতরা অংশ নেবেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেওয়ার কথা রযেছে।
সবমিলিয়ে লাখো মানুষের এই জমায়েত ঘিরে নিরাপত্তায় 'সব ধরনের ব্যবস্থা' নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা।
তিনি বলেন, “গতকাল মঞ্চ প্রস্তুতের সময় থেকেই আমাদের এক প্লাটুন ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সার্বক্ষণিক আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় করে- তারা যেভাবে চাচ্ছে, সেভাবেই নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
“আজ আয়োজনস্থলে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। পোশাকধারী ও অস্ত্রধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের ট্রাফিক পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।”
তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া এই নতুন দলের আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”