আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “মেট্রোরেলের উদ্বোধনে দাওয়াত দিচ্ছি। কোনো মেগা প্রকল্প তো আপনারা করেননি।”
Published : 22 Oct 2023, 12:49 AM
আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দিন জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগও।
সেদিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জড়ো হওয়ার কথা জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মহাযাত্রা’ হবে তাদের, বিএনপি পাবে ‘অশ্বডিম্ব’।
শনিবার বিকেলে শারদীয় দুর্গোৎসবের সপ্তমীতে ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, "২৮ তারিখ আমাদেরও কর্মসূচি আছে, এদিন ‘মহাযাত্রা’ আমাদেরও আছে। চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের মহাযাত্রা শুরু হবে। বিকেলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জনতার ঢল নামবে।"
মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ উদ্বোধনের দিনও ঢাকায় বড় সমাবেশের ঘোষণা দেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “কয়দিন সময় দেবেন? বলে দিচ্ছি, আমাদের সময় নেই। ৪ তারিখে ঢাকায় স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ হবে। মেট্রোরেলের উদ্বোধনে দাওয়াত দিচ্ছি। কোনো মেগা প্রকল্প তো আপনারা করেননি। চুরি করেছেন। দেশের সম্পদ লুট করেছেন, অর্থ পাচার করেছেন।”
অশ্বডিম্ব ‘পাবে’ বিএনপি
গত বুধবার বিএনপির পক্ষ থেকে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের ডাক দিয়ে সেদিন থেকে আন্দোলনের ‘মহাযাত্রা’র কথা বলেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর তিনি নেতা-কর্মীদের ‘আর কয়েকটা দিন’ অপেক্ষায় থাকতে বলেছেন।
জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “একটা দল কর্মীদের বলছে, মাত্র কয়েকটা দিন, আর অপেক্ষা নয়। এর হাঁকডাক শুরু হয়েছে। মহাযাত্রার মহারণ শুরু। কর্মীদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।
“সেই কর্মীরা যখন দেখবে ২৮ অক্টোবরের পরিণতি ১০ ডিসেম্বরের মতো অশ্বডিম্ব হবে। তখন বিএনপি নেতাদের কাঠগড়ায় দাড় করাবে সেই কর্মীরাই।”
২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন থেকে ‘বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশ চলবে’ বলে দলের নেতাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য আসার পর রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বিএনপি সেই সমাবেশটিও করতে চেয়েছিল নয়াপল্টনে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কর্মসূচির তিন দিন আগে ‘অনুমতি ছাড়াই’ নয়াপল্টনে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দিলে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। গ্রেপ্তার হন মির্জা ফখরুলসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
শেষ পর্যন্ত সমাবেশটি হয় নয়াপল্টন থেকে কিলোমিটার পাঁচেক দূরে শহরের এক প্রান্তে সায়েবাদাদের কাছে গোলাপবাগ মাঠে। সেই মাঠে গরুর হাট বসে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএনপির আন্দোলন ‘গরুর হাটে মারা পড়েছে’।
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ক্ষমতার পরিবর্তন চাই নির্বাচনের মাধ্যমে।”
‘শেখ হাসিনা ছাড়া আপনজন নেই’
বিএনপি ও তার সঙ্গীদের বিষয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সতর্কও করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “দেশে রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থির, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক।
“আমাদের দেশে রাজনীতিতে যখন অবরোধ শব্দ শুনি, তখন জনগণ আতঙ্কিত। এই অবরোধ কেমন তা জনগণ ২০১৪ সালে দেখেছে। ২০০১ সালে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্যাতিত হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে প্রকৃত বন্ধু হিসেবে দেখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “অস্থিরতার ডাক দিচ্ছে অশুভ শক্তি, এদের বধ করতে হবে। উৎসব যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, ২০০১ যাতে আর না হয় সেজন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোনো নেতা, আপনজন নেই সংখ্যালঘুদের। আমরা আপনাদের পাশে আছি, থাকব ছিলাম।
“দুর্গা পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মনিটরিং করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্রিফ করেছেন। আগের অশুভ ঘটনাগুলো হিন্দুদের কষ্ট দিয়েছে। এ অপকর্মের পুনরাবৃত্তি চাই না। আশা করি দশমী পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।"
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিক ও মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মনন্দ্রী কুমার নাথও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।