“বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে হাত মিলিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এই মেয়েটিকে হত্যা করেছে,” বলেন সুজন মোল্লা।
Published : 16 Mar 2024, 07:13 PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায় দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদল।
শনিবার বিকালে নয়াপল্টনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশে এ অভিযোগ করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, “ছাত্রলীগের অত্যাচার নির্যাতন এটা নতুন নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে হাত মিলিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এই মেয়েটিকে হত্যা করেছে।
“আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও দোষীদের বিচারের আওতায় এনে কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তির দাবি করছি।”
সংগঠনের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, “একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সুইসাইডের আগে ফেইসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসই প্রমাণ করে- প্রতিটি ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের ভিসিলীগ, প্রক্টরলীগ, ছাত্রলীগ কতোটা বেপরোয়া অত্যাচার, নির্যাতন, ধর্ষণের অভয়ারণ্য তৈরি করেছে।
“আমি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত শাস্তি দাবি করছি।”
তবে ছাত্রদলের এই বক্তব্যকে প্রত্যাখান করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবন্তিকা আমাদের বোন৷ তার মৃত্যুতে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তার মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে দেখে যারা দোষী, তাদের শাস্তি আমরাও চাই।
“অবন্তিকা ফেসবুক পোস্টে অনেককিছু উল্লেখ করে গেছে। এখানে ছাত্রলীগকে টেনে আনছে অস্তিত্বহীন ছাত্রদল, যার কোনো ভিত্তি নাই।”
কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে ফাইরুজ শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ‘পিসি পার্ক স্মরণিকা’ নামের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় গলায় রশি বেঁধে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
মৃত্যুর ১০ মিনিট পূর্বে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য আম্মান সিদ্দিকী নামে তার এক সহপাঠীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগে নিজের ফেইসবুক পেইজে দীর্ঘ একটি লেখা পোস্ট করেন অবন্তিকা।
তিনি লেখেন, “আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।”
এ দুজনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারে শনিবার বিকালে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের এক সমাবেশ থেকে। এই দাবি পূরণ না হলে সোমবার উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ার উচ্চারণ করা হয়েছে ওই সমাবেশে।