জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা, শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা এবং দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনাগুলো যে অগাস্ট মাসেই ঘটেছিল, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
Published : 09 Jul 2023, 06:18 PM
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অগাস্ট মাসে আবার কোনো নাশকতার ছক আটছে কিনা, সেই সংশয় প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা, শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা এবং দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনাগুলো যে অগাস্ট মাসেই ঘটেছিল, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
অগাস্ট মাস সামনে রেখে বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গি গোষ্ঠী বলুন, স্বাধীনতাবিরোধী বলুন কিংবা যেসব দল চক্রান্ত করে তারা অগাস্ট মাসকেই সবসময় বেছে নেয়।
“আমরা ১৫ অগাস্ট দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবরণ করার দৃশ্যটাও আপনারা দেখেছেন, সেটিও অগাস্ট মাসে ঘটেছিল। ২১ অগস্ট প্রধানমন্ত্রীকে বোমায় বোমায় উড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেই অগাস্ট মাসেই ব্যবস্থা করেছিল। ৬৩ জেলার বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা তারা করেছিল। কাজেই অগাস্ট মাস তাদের খুব প্রিয় মাস। এবং সবসময় এই অগাস্টকেই তারা বেছে নেয়।”
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অগাস্ট মাস সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির বিষয়ে কামাল বলেন, “আমার মনে হয়, সেই ধরনের একটা ইংগিত তারা দিচ্ছেন কিনা, তারাই জানেন।
“তারা আন্দোলনের কথা বলছেন, কিন্তু জনগণ ইতোমধ্যে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের কোনো আন্দোলনে জনগণ তাদের সহযোগিতা করছে না, সমর্থন করছে না।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলনের কথা বলছে, বছরের পর বছর বলছে, ওমুক দিন করবে, তমুক দিন করবে, এটা আমরা শুনেই আসছি। আন্দোলনে যদি জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকে, জনগণ যদি সেই আন্দোলনে যুক্ত না হয় কোনো আন্দোলনই হয় না।
“তারা যদি কোনো ধংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয় বা মানুষ হত্যার কোনো পরিকল্পনা থাকে তাহলে অবশ্যই নিরাপত্তা বাহিনী সেগুলো দেখবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
শোক দিবসে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা
১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে সারা দেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সচিবালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন উপলক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতীয় শোক দিবস পালনে কোনো নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এলে তা কীভাবে মোকাবেলা করা হবে, তা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে।
শোক দিবসের দিন সকাল সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেজন্য ওই এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে জাতির পিতার পরিবারের সদস্যসহ অন্য শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন, সেখানেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিবিদরা ধানমণ্ডি ও বনানীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। জাতির পিতার সমাধিস্থলের অনুষ্ঠানসহ শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক সংগঠন আয়োজিত সব অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শোক দিবসের অনুষ্ঠানস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স, ডুবুরি ও ফায়ার সার্ভিসের সব ধরনের কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, বনানী কবরস্থান, টঙ্গিপাড়াসহ সারা দেশে র্যাবের দৃশ্যমান উপস্থিতি থাকবে। দেশব্যাপী নাশকতা প্রতিরোধে ও নিরাপত্তা রক্ষায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে কেউ অপপ্রচার চালাতে না পারে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সেদিকেও নজরদারি করবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।