বিদেশি কূটনীতিকদের সাম্প্রতিক তৎপরতারও সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
Published : 26 Jan 2023, 09:02 PM
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়া বাসায় গিয়ে রাজনীতি করবেন না এমন মুচলেকা দিয়েছেন। আর মুচলেকা দিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন তার ছেলে তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় একথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “খালেদা জিয়ার ভাই ও বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিলেন, হাসপাতাল থেকে বাসায় আনার জন্য।
“সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে বাসায় আনলে যদি বাসায় বসে আবার রাজনীতি করে। সেই জন্য তাদের বললো, বাসায় এসে যদি আবার রাজনীতি করতে পারবে, সেটা তো দেওয়া যাবে না। তখন তারা বলছে, মুচলেকা রয়েছে, খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না।”
“সাজাপ্রাপ্ত আসামি রাজনীতি করবে না। মুচলেকা দিয়েছে। আর সে ১০ তারিখে (১০ ডিসেম্বর) ক্ষমতা দখল করবে? শেখ হাসিনার পতন ঘটাবে? এসব হল জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও তাদের লোকদের কিছু খোরাক দেওয়া।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩৭ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন শেখ সেলিম।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন দাবি করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তার (তারেকের) ৩০ বছর সাজা হয়েছে। মানিল্ডারিং মামলায় ৭ বছর সাজা হয়েছে। তারেক জিয়া কখনোই ঢাকায় আসবে না। ঢাকায় আসলে তাকে জেলে যেতে হবে। রাজনীতি তো দূরের কথা, কখনও নির্বাচনই করতে পারবে না।”
‘রাষ্ট্র মেরামত’ নিয়ে বিএনপির রূপরেখার সমালোচনা করে তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে শেখ সেলিম বলেন, “সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া লন্ডনে বসে বাংলাদেশ মেরামত করতে চায়। আরে আগে তো তোমার মেরামত করা দরকার।
“তুমি পারলে বাংলাদেশে আস। তুমি যদি বাংলাদেশে আস, তাহলে জনগণ তোমাকে কীভাবে মেরামত করবে, অধীর আগ্রহে তোমার জন্য বসে আছে। কিন্তু আসবে না, ও কোনো দিন বাংলাদেশে আসবে না।”
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কূটনীতিকদের নানা তৎপরতারও সমালোচনা করেন সাবেক মন্ত্রী শেখ সেলিম।
তিনি বলেন, “কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে আমাদের রাজনীতির ব্যাপারে কিছু কূটনীতিক তোড়জোর করছে। কারও কারও বাড়িতেও গিয়ে হাজির হচ্ছে। এ কী আশ্চর্য! আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নাই।
“আমাদের রাজনীতি নির্ধারণ করবে জনগণ। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছি। আমাদের কোনো প্রভু নেই। আমাদের প্রভু হল এই দেশের জনগণ। কারও প্রেসক্রিপশনে এই বাংলাদেশ চলবে না।”
সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে উল্লেখ করে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে শেখ সেলিম বলেন, “তোমরা যদি একটার পর একটা নির্বাচন না করো, তোমাদেরও করুণ পরিণতি হবে। মুসলিম লীগ ও ভাসানী ন্যাপের মতো হবে। বাংলাদেশে কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির সঙ্গে বিপক্ষের শক্তি কখনোই বিজয়ী হতে পারে না।”