শারিয়ার ‘খুলা’ আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয় আদালত

নিয়তির পরিহাস! মুসলিম সমাজের যে মঙ্গলগুলো আমাদের আলেমদের করার কথা সেটা করছে এক অমুসলিম সরকার ও তার আদালত।

হাসান মাহমুদহাসান মাহমুদ
Published : 13 Nov 2022, 12:49 PM
Updated : 13 Nov 2022, 12:49 PM

ভারতের কেরালার হাইকোর্টে বিচারক মুহম্মদ মুশতাক (মুসলিম) এবং বিচারক সি এস ডিয়াস (খ্রিস্টান) এ  শারিয়ার 'খুলা' আইনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন চলতি নভেম্বরের ২ তারিখে; তাঁরা মুসলিম নারীকে স্বামীর অনুমতি ছাড়াই তালাকের অধিকার দিয়েছেন।

শারিয়া আইনে স্বামী ‘তালাক’ উচ্চারণ করে স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে। কিন্তু স্ত্রী তালাক চাইলে তাকে শারিয়া কোর্টে আবেদন করতে হয়। কোর্ট বিবাহ বাতিল করতে পারে যেসব কারণে সেগুলো হলো- (১) স্বামীর শারীরিক অক্ষমতা, (২) স্ত্রীকে ‘বেশি’ মারপিট, (৩) খরচ না দেওয়া ও (৪) দীর্ঘ অনুপস্থিতির প্রমাণ থাকলে। প্রমাণ না থাকলে তাকে বিবাহবন্ধন থেকে মুক্ত করতে স্বামীর সম্মতি আবশ্যক। আইনটা হলো - "স্ত্রীর ইচ্ছার ভিত্তিতে তৎকর্তৃক প্রদত্ত মালের বিনিময়ে সমঝোতার মাধ্যমে স্বামী ‘খুলা’ বা অনুরূপ অর্থবোধক শব্দের প্রয়োগে তাহাকে বিবাহবন্ধন হইতে মুক্ত করিলে তাহাকে ‘খুলা’ বলে।” (বিধিবদ্ধ ইসলামী আইন ১ম খণ্ড ধারা ৩৫৫, শাফি’ই আইন #n-৫.০, হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ১১২, শারিয়া দি ইসলামিক ল’- ডঃ আবদুর রহমান ডোই, পৃঃ ১৯২ ইত্যাদি) 

একটু পরেই আমরা দেখব, ‘সমঝোতার মাধ্যমে’- এই মিষ্টি শব্দদুটোর মধ্যে ‘স্বামীর সম্মতি’-র হিংস্র দাঁতটা লুকিয়ে আছে।

নারীর জীবনে ‘খুলা’ আইনের প্রভাব    

এ আইনে স্ত্রীকে বছর ধরে কোর্টে ও উকিলের কাছে ছুটতে হয়, টাকা ঢালতে হয়, চাকরি থেকে ছুটি নিতে হয় বা ছাড়তে হয়, কখনো বাচ্চাদের ভরণপোষণের টাকাও ত্যাগ করতে হয়, কারণ স্বামী তালাকে তার সম্মতির দাম হিসেবে ওগুলো চেয়ে বসে। স্ত্রী ওগুলো মেনে না নেওয়া পর্যন্ত স্বামী তালাকের অনুমতি দেবে না, স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করতে পারবে না (স্বামী কিন্তু পারবে)। ইন্টারনেটে 'Malaysian groups welcome first Islamic women judges' -শিরোনামে বিবিসির খবরে দেখুন, "এক নারীকে ৭ বছর অপেক্ষা করিতে হইয়াছিল শারিয়া কোর্টে তাহার বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদনের শুনানির জন্য। ইতোমধ্যে তাহার স্বামী তাহাকে তালাক দিতে অস্বীকার করিয়া নুতন পারিবারিক জীবন শুরু করিয়াছিল। ইহা বহু মামলার একটি মাত্র"।

‘খুলা’ আইন মুসলিম নারীর ওপরে কিভাবে নির্মম অত্যাচার করে? দেখুন খেলাফত আমলে শারিয়া কোর্টের ‘শিকায়তে দফতরি’-র (নালিশ বিভাগ) নিষ্ঠুর ব্ল্যাকমেইলিং:  

"দুর্নীতিপরায়ণ কাজিরা ষড়যন্ত্র করিত ও ঘুষ খাইত…..সতেরো ও আঠারো শতাব্দীতে প্রচুর খুলা হইত। খুলা পদ্ধতিতে স্ত্রীকে যে কোন প্রাপ্য পরিত্যাগ করিতে হইত। এইজন্য খুলার দলিলে এক অতিরিক্ত কাগজ সংযোজিত করা হয়। উহাতে সন্তানদের নাম, পিতার নাম ও সন্তানদের খরচের ব্যাপারে (স্বামীর দায়িত্ব নাই, এই ব্যাপারে) স্ত্রীর স্বীকৃতির কথা লিখা থাকিত …। ইস্তাম্বুলের হালিমা খাতুন দাবি করিল যে মোহর পরিত্যাগ করিবার জন্য তাহার স্বামী আহমেদ তাহাকে খুলার জন্য চাপ দিতেছে।” (উইমেন, দ্য ফ্যামিলি অ্যান্ড ডিভোর্স ল’জ ইন ইসলামিক হিস্ট্রি- ড. আমিরা আজহারি, পৃঃ ৮৯, ৯২, ১০০, ১০৪।) 

‘খুলা’ আইন রসুল (স.) এর বিরোধী    

দলিল: ১ক: - “এখনও আমার চোখের সামনে ভাসিতেছে যে, বরীরার স্বামী মুগীস কাঁদিতেছে এবং তাহার পিছুপিছু ছুটিতেছে। চোখের পানিতে তাহার দাঁড়ি ভিজিয়া গেল। এই দৃশ্য দেখিয়া নবী করীম (দঃ) বলিলেন, ‘হে আব্বাস! বরীরার প্রতি মুগীসের ভালবাসা আর মুগীসের প্রতি বরীরার উপেক্ষা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক!’ তিনি বরীরাকে বলিলেন, ‘তুমি যদি মুগীসকে পুনরায় গ্রহণ করিতে!’ সে বলিল, ‘ইয়া রসুলুল্লাহ! ইহা কি আমার প্রতি আপনার নির্দেশ?’ তিনি বলিলেন, ‘আমি সুপারিশ করিতেছি।’ বরীরা বলিল, ‘মুগীসের প্রতি আমার কোন আকর্ষণ নাই’।” (হাফেজ আবদুল জলিলের অনূদিত বাংলা সহি বুখারী ২৪৭৭ ও মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহসিন খানের অনুদিত সহি বুখারী - ৭ম খণ্ড ২০৬, ৩য় খণ্ড ৬৪৮।)       

দলিল ১খ: - “বরীরা আরজ করলেন: - ‘ইয়া রসুলুল্লাহ! এটি আপনার নির্দেশ হলে শিরোধার্য, পক্ষান্তরে সুপারিশ হলে আমার মন তাতে সম্মত নয়’। রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন: ‘নির্দেশ নয়, সুপারিশই’। বরীরা জানতেন যে, রসুলুল্লাহ (সা.) নীতির বাইরে অসন্তুষ্ট হবেন না। তাই পরিষ্কার ভাষায় আরজ করলেন – ‘তাহলে এ সুপারিশ আমি গ্রহণ করব না’। রসুলুল্লাহ (সা.) হৃষ্টচিত্তে তাকে তদাবস্থায়ই থাকতে দিলেন।”(মওলানা মুহিউদ্দনের অনুদিত কোরান পৃষ্ঠা ২৭১।)  

অর্থাৎ রসুল (স) স্বয়ং তার ইচ্ছে ও সুপারিশের বিরুদ্ধে নারীর বিবাহ-বিচ্ছেদের নিরঙ্কুশ অধিকার দিয়েছেন। 

দলিল ২: "থাবিত বিন কায়েসের স্ত্রী রসুলের নিকট আসিয়া বলিল, ‘হে আল্লাহ’র রসুল! থাবিত বিন কায়েসের চরিত্র বা দ্বীনদারীর উপর আমার কোন অভিযোগ নাই। কিন্তু আমার ভয় হইতেছে আমি আল্লাহ’র অনুগ্রহের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকিতে পারিব না’- ইহাতে রসুল বলিলেন, ‘তুমি কি তাহার বাগানটা ফেরৎ দিতে রাজি?’ সে বলিল, ‘হ্যাঁ।’ অতএব সে তাহাকে বাগান ফেরৎ দিল এবং রসুল (দঃ) থাবিতকে তালাক দিতে বলিলেন"। (ড. মুহসিন খানের অনুদিত বুখারী ৭ম খণ্ড হাদিস ১৯৯। এই স্ত্রীর নাম জামিলা - হাদিস নং ২০০। এ হাদিস আছে বাংলা বুখারীতেও - অনুবাদক হাফেজ আবদুল জলিল হাদিস ২৪৮৩।) 

স্বামী প্রেমময় দ্বীনদার হলেও নারী বাধ্য নয় ইচ্ছার বিরুদ্ধে সংসার করতে।

দলিল ৩:  এক নারী এসে নবীজীকে (স.) বললো - “তাহার পিতা তাহাকে বিবাহ দিয়াছে যাহা তাহার পছন্দ নহে। নবীজী (স) তাহাকে অধিকার দিলেন বিবাহ-চুক্তি রাখিতে অথবা বাতিল করিতে"। (সহি ইবনে মাজাহ ৩য় খণ্ড হাদিস ১৮৭৫।) 

অর্থাৎ নবীজী (স.) নারীকে বিয়ে বাতিল করার নিরঙ্কুশ অধিকার দিয়েছেন, ইচ্ছার বিরুদ্ধে সংসার করতে বাধ্য করেননি। কিন্তু ইসলামের নামে হিংস্রতাকে বৈধ করার জন্য অনেকেই কুটিল দক্ষতায় ‘এর মানে ওই, ওর মানে তাই, তার মানে এই’ করে পানি ঘোলা করে থাকেন। শারিয়া আইন কোরান ও রসূলকে (স) বহুবার লঙ্ঘন করেছে, যেমন: “এক বা দুই তালাকের পর স্বামী তাহার স্ত্রীকে আবার ফিরাইয়া লইতে পারে, স্ত্রীর সম্মতি থাকুক বা না থাকুক।” (বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড ধারা ৩৫২।)

স্বামী এমন 'দেবতা' কবে থেকে হল? সংসার কি নারীর জেলখানা, নাকি ইঁদুর মারা কল যে সেখানে ঢোকা যাবে কিন্তু বেরুনো যাবেনা? ইসলামের নামে নারীর পায়ে এমন শেকল কে পরালো? 

দলিল ৪ এটা সূরা আহযাব আয়াত ২৮ এর সাথে যুক্ত। "আয়েশা (র) বলিয়াছেন - 'আল্লাহ'র রসূল (স) আমাদিগকে সুযোগ (option) দিয়াছিলেন (তালাকপ্রাপ্তা হইতে) এবং আমরা আল্লাহ ও তাহার রসূলকে (স) মনোনীত করিয়াছিলাম। সুতরাং আমাদিগকে সেই সুযোগ দেওয়াটি তালাক হিসাবে গণ্য নহে।"  (ড. মুহসিন খানের অনুদিত বুখারী ৭ম খণ্ড হাদিস ১৮৮।) 

‘খুলা’ আইন কোরান বিরোধী   

দলিল # ৫: - “হে নবী! আপনি আপানার স্ত্রীদেরকে বলুন, 'তোমরা যদি দুনিয়ার জীবন ও এর চাকচিক্য কামনা কর তবে আসো, আমি তোমাদের ভোগসামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদেরকে বিদায় দেই।” - সূরা আহযাব ২৮।

আল্লাহ নবীপত্নীদেরকে (র) নিরঙ্কুশ অধিকার দিয়েছিলেন তাকে ছেড়ে যেতে, সেটাই আসল কথা। তারা ছেড়ে যাননি সেটা অন্য বিষয়। কিন্তু ইসলামের নামে হিংস্রতাকে বৈধ করার জন্য অনেকেই কুটিল দক্ষতায় ‘এর মানে ওই, ওর মানে তাই, তার মানে এই’ করে পানি ঘোলা করে থাকেন। 

দলিল ৬: সূরা নিসা ১৯-এর সংশ্লিষ্ট অংশ: "বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহণ করা তোমাদের জন্যে হালাল নয়"। সাহাবী আবু কায়েস আনসারী (রা) মারা গেলে তার স্ত্রী কুবাইশা'র ওপরে তার অন্য স্ত্রীর পুত্র বিয়ে ঘটিত অত্যাচার করায় কুবায়শা রসূলের (স.) কাছে অভিযোগ করে। পটভূমির অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ইমাম ওয়াহিদির (মৃত ১০৭৫ সাল) ‘আসবাব আল নুযুল’ কেতাবের ৪৯ পৃষ্ঠায় এর বিস্তারিত বর্ণনা আছে। প্রয়াত ব্যক্তির আত্মীয়েরা তার স্ত্রীকে বিয়ে সংক্রান্ত নানা রকম মতলব করে তার ওপর অত্যাচারী নিয়ন্ত্রক হয়ে বসত সেই ব্যাপারে ‘উত্তরাধিকারী’ শব্দটা প্রয়োগ হয়েছে। এই নারী-বান্ধব আয়াত দিয়ে কোরান সেই অত্যাচার বন্ধ করেছে। যে স্ত্রী বিবাহবন্ধনে থাকতে চায়না তাকে জোর করে রেখে দেয়াটা এ আয়াতের লংঘন।     

দলিল ৭: সূরা বাকারা ২২৯ সংশ্লিষ্ট অংশ - “তোমরা যদি আশঙ্কা কর, তারা আল্লাহর সীমা প্রতিষ্ঠিত রাখতে পারবে না তবে তাদের জন্য এতে কোনও গুনাহ নেই যে, স্ত্রী মুক্তিপণ দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেবে। এটা আল্লাহর স্থিরকৃত সীমা"।  

অর্থাৎ আমরা দেখলাম, কোরান-রসূলের নামে শারিয়া আইন বানিয়ে নারীর ওপরে যে অত্যাচার করা হয় সেটা সেই কোরান-রসূলের তথ্য দিয়েই দূর করা সম্ভব। এসবের ভিত্তিতেই মুসলিম বিশ্বের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশ মিসর ২০০০ সালে আইন করেছে নারীরা দেনমোহর ফিরিয়ে দিয়ে তালাক পেতে পারবে। (সার্চ HRW.ORG - “III. Overview of Marriage and Divorce Laws in Egypt”)

দেড় হাজার বছর কেটে গেল আজও মানবজীবনের, বিশেষ করে নারীর ওপর শারিয়া আইনের প্রভাব নিয়ে কোনো সরকারি গবেষণাই হলনা। যাহোক, অন্যান্য কিছু শারিয়া আইনের মতো এই ‘খুলা’ আইনটাও এসেছে ইহুদী ‘GETT’ আইন থেকে যেটাতে তালাক চাইলে স্ত্রীকে একই দুর্ভোগ পোহাতে হয় এবং ধর্মীয় তালাক না হলে স্ত্রী আবার বিয়েও করতে পারে না (স্বামী কিন্তু পারে, শারিয়া আইনের মতই)।   

এটাও বলা দরকার, এই নারী-নিগ্রহের সমর্থনেও কিছু দলিল আছে। যেমন (সূত্র ইন্টারনেট - হাদিস যাচাই করা সম্ভব হয়নি):  

াসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনোরূপ কষ্টের সম্মুখীন না হয়ে যে নারী তার স্বামীর কাছে তালাক চায়, তার জন্য জান্নাতের সুঘ্রাণ হারাম।’ (আবু দাউদ, ২২২৬; তিরমিজি ১১৮৭; ইবনে মাজাহ ২০৫৫)। 

এই নারী-নিগ্রহের হাদিসগুলো বাতিল, কারণ (১) ওপরে দেখানো কোরান রসূলের (স) নারী-বান্ধব সূত্রগুলো অনেক বেশি শক্তিশালী, (২) নিরপরাধের ওপর কোনো নিগ্রহই ইসলামী হতে পারেনা। 

‘এর মানে ওই, ওর মানে তাই, তার মানে এই’ ধরনের কূটতর্কের প্যাঁচ দিয়ে মানুষের অধিকার হরণ করাটা জঘন্য অধর্ম। আল্লাহ আমাদের জীবন সহজ করতে চান, তিনি আমাদের কষ্ট চান না, দ্বীনের ভিতর তিনি আমাদের ওপর কঠোরতা চাপিয়ে দেননি। 

সুরা বাকারার ১৮৫, সুরা মায়েদার ৬ এবং সুরা হজ এর ৭৮ ইত্যাদির ভিত্তিতে ওই নারী-নিগ্রহের সমর্থক হাদিসগুলো বাতিল হয়ে যায়। 

সুরা বাকারার ২৩৭ সংশ্লিষ্ট অংশ: “যার হাতে বিবাহ-বন্ধন রয়েছে সে মাফ করে দেয়"। এর অর্থ ধরা হয়েছে স্বামীর হাতে বিবাহ-বন্ধন। কিন্তু এটাকে শ্বাশত ধরলে সেটা (১) ওপরে দেখানো কোরান হাদিসের সূত্রগুলোর বিরুদ্ধে যাবে এবং (২) নারী-নিগ্রহ চলতে থাকবে। তাই বলা যায় এটা কোরানের অন্যান্য অনেক বিষয়ের মতো তৎকালীন বিদ্যমান প্রথার উল্লেখ যা শ্বাশ্বত নয়, যেমন- জিজিয়া কর, দাসপ্রথা বা বন্দিনী-সহবাস (সূরা মুহম্মদ ৪, মুমিনুন ৫, ৬, নিসা ২৪, আহযাব ৫০ ইত্যাদি)। এগুলো মুসলিমেরা পেছনে ফেলে এসেছেন, এগুলো তারা আর কখনো প্রয়োগ করবেন না। আশা করি আলেমরা এই আয়াতটার গ্রহণযোগ্য নারী-বান্ধব ব্যাখ্যা দেবেন।      

ভারতের সরকারের মুসলিম-বিরোধী কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে আমার একাধিক নিবন্ধ আছে। কিন্তু শারিয়ার বর্বর ‘তিন তালাক'-এর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে ওই ভারতেরই সুপ্রিম কোর্ট, ‘তিন তালাক’-এর বিরুদ্ধে আইন বানিয়ে মুসলিম নারীকে রক্ষা করেছে ওই ভারত সরকারই। এবারেও ‘খুলা’র মতো বর্বর ইসলাম-বিরোধী আইনের গ্রাস থেকে মুসলিম নারীকে মুক্তি দিল ওই ভারতেরই আদালত। 

নিয়তির পরিহাস! মুসলিম সমাজের যে মঙ্গলগুলো আমাদের আলেমদের করার কথা সেটা করছে এক অমুসলিম সরকার ও তার আদালত।