Published : 21 Aug 2020, 06:47 PM
দেশের রাজনীতি এখন স্থবির। করোনাভাইরাসের কারণে কোনো বড় রাজনৈতিক তৎপরতা কোনো রাজনৈতিক দলের নেই। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কিছু নড়াচড়া লক্ষ করা গেলেও বিএনপির তেমন কোনো খোঁজখবর নেই বললেও চলে। গণমাধ্যমেও বিএনপির তেমন কোনো খবর প্রায় নেই। বিএনপির একজন হিতাকাঙ্ক্ষী বলে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র খ্যাত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কয়েকদিন আগে একটি দৈনিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে 'ইনভ্যালিড' উল্লেখ করে বলেছেন, একদিকে তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি, অন্যদিকে অসুস্থ। ফলে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার অবস্থায় তিনি নেই। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে পলাতক থাকায় তাকে দিয়ে বিএনপির হাল ধরা সম্ভব হবে না। সবদিক বিবেচনায় বিএনপির নেতৃত্বে তারেক রহমানের কন্যা জায়মা রহমানকে আনার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী (ভোরের কাগজ, ১৬ অগাস্ট ২০২০)।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরামর্শ বিএনপি গ্রহণ করবে কিনা তা এখনই বলা মুশকিল। তবে বিএনপি নেতৃত্বে পরিববর্তন আনা খুব সহজ হবে না। বিএনপিতে তারেক রহমানের কবজি শিথিল হওয়া কঠিন। তবে বিএনপির নেতৃত্ব বদলের চেয়ে বড় প্রয়োজন দলটির রাজনীতি বদলানো। বিএনপি যে রাজনীতি অনুসরণ করে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের প্রতি দলটির যে মারাত্মক বিদ্বেষী মনোভাব, সে ক্ষেত্রে পরিবর্তন না এলে বিএনপির পক্ষে আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব বলে অনেকেই মনে করেন না।
বিএনপি ক্ষমতার বাইরে আছে দেড় দশক হয়ে গেল। গণতন্ত্রের জন্য এখন হাহাকার করলেও ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপি কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস না দিয়ে নির্মূল করার নীতি নিয়েছিল। ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা তার বড় প্রমাণ।
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। মূলত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্যই ওই গ্রেনেড হামলা চালানো হলেও তিনি সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। তবে আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ কমপক্ষে ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। শেখ হাসিনাসহ তিনশতাধিক নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন। এদের অনেকেই সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কেউ কেউ এখনও শরীরে অসংখ্য স্প্রিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছেন। ২১ অগাস্টের বীভৎস হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত থাকবে।
২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। দেশে কোনও অপরাধ সংঘটিত হলে প্রাথমিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের দায়িত্ব। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার মতো এত বড় অপরাধ যারা করেছিল তাদের চিহ্নিত করা, গ্রেফতার করা এবং আইনের হাতে সোপর্দ করার জরুরি কর্তব্যটি তৎকালীন সরকার সম্পাদনে কেবল চরমভাবে ব্যর্থতারই পরিচয় দেয়নি, বরং ঘটনা প্রবাহ অন্যখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টাও চালানো হয়েছে। অপরাধীরা যাতে নিরাপদে থাকতে পারে কৌশলে সেই চেষ্টাই করা হয়েছে। নিরপরাধ নিরীহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হয়েছিল। সাধারণ মানুষের চোখে ধূলা দেওয়ার জন্য যে নানা অপচেষ্টা-অপপ্রয়াস বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নিয়েছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
এখন এটা অনেকের কাছে পরিষ্কার হয়েছে যে, ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সংশ্লিষ্টতা ছিল। গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের দেওয়া তথ্য থেকেই জানা যায় যে, হামলাকারীদের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের একাধিক মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের যোগাযোগ ছিল। সে সময়ে ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত 'হাওয়া ভবনে' তারেক রহমান ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের উপস্থিতিতে হামলায় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু এটাও আমাদের জানা আছে যে, তখন সরকার জজ মিয়া নামের একজন ছিঁচকে অপরাধীকে গ্রেফতার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল। সরকার তখন শৈবাল সাহা পার্থ নামের একজনকে গ্রেফতার করেও নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিল।
২১ অগাস্টের হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে এবং শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে সংবাদপত্রে একটি ই-মেইল বার্তা পাঠানোর সূত্র ধরে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পার্থই ওই ই-মেইল বার্তাটি পাঠিয়েছিল তার কোনও তথ্য-প্রমাণ পাওয়া না গেলেও সম্পূর্ণ অনুমানের ওপর নির্ভর করে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে প্রথম চারদিন অজ্ঞাতবাসে রাখে এবং পরে তিন দফা রিমান্ডে নিয়ে তার ওপর প্রচণ্ড শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালায়। দরিদ্র বাবা-মায়ের সন্তান পার্থ সাহা একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। অত্যন্ত কষ্ট করে উচ্চ শিক্ষা শেষে যখন চাকরি খুঁজছিলেন, তখনই তার ওপর নেমে আসে জোট সরকারের ভয়াবহ থাবা।
পার্থ সাহার প্রথম অপরাধ তিনি 'হিন্দু' এবং দ্বিতীয় অপরাধ তিনি ভারতের মাদ্রাজে গিয়ে বিবিএ ও এমবিএ পাস করেছেন। এমন একজন মানুষ 'র'-এর এজেন্ট না হয়ে পারেন! তার কাছ থেকে যেমন সন্দেহজনক কোনও গোপন তথ্য পাওয়া যায়নি, তেমনি মারপিট করে প্রায় পঙ্গু বানিয়েও কোনও স্বীকারোক্তি আদায় করা সম্ভব হয়নি। তা সত্ত্বেও সরকারিভাবে তাকে 'র'-এর এজেন্ট বানিয়ে প্রচারের কোনও কমতি দেখা যায়নি। ই-মেইলে হুমকি দেওয়ার জন্য অন্য কাউকে সন্দেহের তালিকায় না এনে পার্থর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো থেকেই বোঝা গিয়েছিল জোট সরকার ২১ অগাস্টের ঘটনা তদন্তে কোন নাটকের মহড়া দিতে চেয়েছে।
কোনও ঘটনা ঘটলেই তার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানো ছিল জোট সরকারের একটি বদঅভ্যাস। ২১ অগাস্টের ঘটনার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ২২ অগাস্ট, ২০০৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের এক সমাবেশে সংগঠনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছিলেন, 'শেখ হাসিনা এবং সাবের হোসেন চৌধুরীকে রিমান্ডে নিলেই প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে'! এ ধরনের বালখিল্য মন্তব্যের জন্য বিএনপি নেতারা ছাত্রদল নেতাকে তিরষ্কৃত তো করেনইনি উল্টো নিজেরাও ওই ধারায় গলাবাজি করেছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর বলেছিলেন, 'উই আর লুকিং ফর শত্রুজ'। তারপর ৩০ অগাস্ট, ২০০৪ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে দলের তৎকালীন মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়াসহ কয়েকজন মন্ত্রী ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন।
তৎকালীন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী আমানুল্লাহ্ আমান ওই সমাবেশে বলেছিলেন, 'আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক তদন্ত চাচ্ছেন। আমরা সব ধরনের তদন্ত করব। খুব তাড়াতাড়িই তদন্ত রিপোর্ট দেব। ওই রিপোর্টে গ্রেনেড হামলার জন্য আব্দুস সামাদ আজাদ, মোহাম্মদ নাসিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ এবং মতিয়া চৌধুরীকে দায়ী করা হবে।' ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে বিএনপি যে কত ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা ফেঁদেছিল সেটা আমানুল্লাহ্ আমানের বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়। তদন্ত না হতেই তদন্ত রিপোর্টে কী থাকবে সেটা একজন প্রতিমন্ত্রী বলার পর ওই তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে মানুষের মনে কি ধারণা হতে পারে সেটা বোঝার ক্ষমতাও জোট সরকারের মন্ত্রীদের ছিল না।
বেগম জিয়া নিজেও গ্রেনেড হামলার কথা বলতে গিয়ে খুব দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পেরেছিলেন সেটাও বলা যায় না। ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৪ বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে 'ষড়যন্ত্র' হিসেবে অভিহিত করে বলেছিলেন, সরকারের সাফল্যকে আড়াল করতে 'বোমা' হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বেগম জিয়ার এই বক্তব্য দেশের মানুষকে হতবাক করেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়েছিল সরকারের সাফল্যকে আড়াল করতে, এমন বক্তব্য সরকার প্রধানের মুখ থেকে বের হওয়ার পর ২১ অগাস্টের ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত যে হবে না সেটা তখন সবার কাছেই স্পষ্ট হয়েছিল। বাস্তবে ঘটেছিলও তাই। জোট সরকার ক্ষমতায় থাকতে তদন্ত কাজ অগ্রসর হয়নি, বরং প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার জন্য, সবকিছু ধামাচাপা দেওয়ার কসরৎই চালানো হয়েছিল।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতারা সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করে থাকেন। এই সরকারের আমলে খারাপ কাজ কিছু হচ্ছে না, তেমন কথা বলা যাবে না। ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে দুর্বৃত্তপনাও চলছে। বিরোধী দল হিসেবে সরকারের যেকোনো ভুলত্রুটির সমালোচনা করার অধিকার বিএনপির আছে। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে যখন ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করা হয়, তখন বিনীতভাবে জানতে ইচ্ছে হয়, দলের নেতারা কি আয়নায় নিজেদের মুখ দেখেন না? তার শাসনামলে দেশ কেমন চলছিল সেসব কি তার মনে আছে?
তারা কি একবার ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের সংবাদপত্রগুলোর পাতায় চোখ বুলিয়ে দেখবেন? ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়াসহ আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের হত্যাসহ অসংখ্য বোমা হামলার ঘটনা এবং দেশজুড়ে জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থানের ঘটনাগুলোর কথা মনে পড়লে তার তো বর্তমান সরকারের লাগামহীন সমালোচনা করার কথা নয়। রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। সব শিয়ালের এক রা এর মতো সব রাজনৈতিক দলের এক রা হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। নানা মতের, নানা পথের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করবে-এটাই গণতন্ত্রের রীতি। কিন্তু মত ও পথের ভিন্নতার জন্য সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ নষ্ট হওয়াটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। অথচ বিএনপি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা না করে হত্যার পথ বেছে নিয়েও দিব্যি গণতন্ত্রের জন্য 'লড়াই' করতে পারছে।
বিএনপি বর্তমানে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। অথচ অতীতের ভুল রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলটির মধ্যে কোনো আত্মসমালোচনা নেই। আগামীতে বিএনপি তার সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে ক্ষমতায় গেলে দেশে প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির চর্চা বন্ধ করবে কিনা সে কথা স্পষ্ট করে বলা হয় না। সুযোগ পেলেই বিএনপি নেতারা যেভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে থাকেন তা থেকে তো মনে হয় ক্ষমতায় গেলে দেশে আবার বিরোধী রাজনীতি দমনের নামে নিষ্ঠুর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হবে।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বিএনপি একদিকে বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দেয়, অন্যদিকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এমন কিছু ব্যক্তিকে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। বিশেষ করে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এটা মনে করা কঠিন যে দলটি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে চায়। যে লুৎফুজ্জামান বাবর 'লুকিং ফর শত্রুজ' উক্তি করে রাজনীতিতে কৌতুকের জোগান দিয়েছিলেন তার নামও কমিটি থেকে বাদ দিতে পারেননি খালেদা জিয়া। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাবরকে কমিটিতে রেখে যে বার্তা বিএনপি দিয়েছে তাতে কি মনে হচ্ছে না যে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলার গণতন্ত্র আবার ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা দলটির রয়েই গেছে?
বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আসলেই তাদের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অতীত ভুলের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ২১ অগাস্টের বিয়োগান্ত ঘটনার দায় অস্বীকার করে বিএনপি সুবিধা করতে পারবে না। গ্রেনেড হত্যা মামমার রায় প্রত্যাখ্যান করে কিংবা রায়ক 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ' বলে বিএনপি হাত মুছতে চাইলেও তা সম্ভব হবে না। ১৫ অগাস্ট কেক কাটা পরিহার করে সুবুদ্ধির পরিচয় দেওয়া হয়েছে। ২১ অগাস্টের দায় স্বীকার না করে রাজনীতিতে নতুন অবস্থান তৈরি করা বিএনপির জন্য সহজ হবে বলে মনে হয় না।