Published : 15 Sep 2019, 05:02 PM
অভিযোগ চাঁদাবাজির। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থিত ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে। সংগঠনের অভিভাবক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন। যে কারণেই বোধকরি প্রথমে অভিযুক্তদের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র (স্থায়ী) বাতিল করা হয়েছে। তারপর তাদেরকে সংগঠনের নেতৃত্ব থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সংগঠনটির নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। দীর্ঘ দশ বছরেরও বেশী সময় ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থনপুষ্ট ছাত্র সংগঠন। যার অভিভাবক খোদ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। দাবি করা হয়ে থাকে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্বও তারই নির্বাচন। অতীতেও অবশ্য সংগঠনটির অভিভাবক হিসেবে তিনিই এই সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন। ছাত্রলীগের নেতৃত্বকে স্বচ্ছ, দক্ষ, ও নেতৃত্বের সঠিক গুণাবলীতে ঋদ্ধ করতে অভিভাবক হিসেবে তিনি সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচনে বেশ কতক সংস্কারও করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গেল বছরের অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২ মে ছাত্রলীগের নেতা হওয়ার জন্য পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন সংগঠনটির অভিভাবক শেখ হাসিনা। যেগুলো হচ্ছে:
এক. ছাত্র রাজনীতির শুরু থেকেই ছাত্রলীগ করতে হবে। আগে অন্য ছাত্র-সংগঠন করতো এখন ছাত্রলীগ করে, এমন কাউকে শীর্ষ নেতৃত্বের জন্য বিবেচনা করা হবে না।
দুই. পারিবারিক পরিচয় নিশ্চিত হতে হবে। ছাত্রলীগ নেতার বাবা, মা, ভাই, বোন কী ধরনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তা জানতে হবে। পরিবারের কেউ বিএনপি-জামায়াত বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরুদ্ধ কোন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলে, ঐ ছাত্রলীগ কর্মী নেতৃত্বের জন্য বিবেচিত হবে না।
তিন. নেতৃত্বের জন্য বিবেচিত হতে হলে ছাত্রলীগ কর্মীকে নিষ্কলুষ থাকতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে কোন চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের কোন মামলা কিম্বা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা যাবে না।
চার. ছাত্রলীগ নেতা হতে চাইলে তাকে শুধুই ছাত্র হতে হবে। ছাত্র আবার ব্যবসা করে এমন ছাত্রলীগ কর্মী নেতা নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবে। মেধাবী ছাত্ররা অগ্রাধিকার পাবে।
পাঁচ. কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল এমন ছাত্রলীগ কর্মী নেতৃত্বের জন্য বিবেচিত হবে না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে অভিভাবকের এমনতর নির্দেশনা মেনে নির্বাচিত ছাত্রলীগ নেতৃত্ব কেন এমনসব অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছে। সহজ সরল উত্তর 'সুযোগ থাকলে করবেই বা না কেন'। উত্তরটি আমাদের মত সাধারণ মানুষের কাছে সহজ এবং সরল হলেও এর মধ্যেই রয়েছে যত গরল। আর এই গরল পরিস্থিতি তৈরি করছে খোদ রাষ্ট্র(?) এবং তার পরিচালক সংগঠন দল।
আমরা যদি বর্তমান রাষ্ট্রটির পরিচালক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাষ্ট্র পরিচালনার ইতিহাসের শুরুর দিকটাতে ফিরি তাহলে উত্তর খুঁজবার পথ-পদ্ধতি অনেকটা সহজ হয়ে যায় বৈকি।
রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র এক মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে একাত্তর সালে আমরা একটি দেশ পেয়েছি বটে। প্রশ্ন হচ্ছে সেসময়ে আমরা কী একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র রাষ্ট্র পেয়েছিলাম। যে রাষ্ট্রটির প্রতি পরতে থাকতে হতো মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খাজাত সব রাষ্ট্রিক সংগঠন। হ্যাঁ অনেকেই হয়তো এমনটা বলতেই পারেন যে, একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র রাষ্ট্রিক কাঠামো গড়ে তুলবার মত যথেষ্ট প্রস্তুতি, সময় এমনকি সদিচ্ছা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দলটির ছিল কি না। আমার মতে এর কোনটাই ঐ দলটির ছিল না। আর এই না থাকার জন্য সবথেকে বড় দায়ী হচ্ছে দলটির শ্রেণি চরিত্র। যে চরিত্রটি পাকিস্তান নামীয় রাষ্ট্রটির পরিচালক শ্রেণির চারিত্রিক বৈশিষ্ট থেকে খুব একটা আলাদা কিছু নয়। যদিও পাকিস্তান রাষ্ট্রটির পরিচালক শ্রেণির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক জনআন্দোলনের পুরোভাগে থাকা এবং একটি জনযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়ার সুবাদে পূর্বতর বৈশিষ্টগুলো ঝেড়ে ফেলবার যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছিল দলটির সামনে। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের কিছু সময়ের মধ্যেই সে সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে যায় কিম্বা অনেকটা ইচ্ছে করেই নেয়নি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। যে কারণে আমরা দেখি যে, মুক্তিযুদ্ধজাত সকল শ্রেণিচেতনা ভূলুন্ঠিত হয় ক্ষমতার কাছে। প্রত্যাখাত হয় যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্বে একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবনা। নাকচ হয়ে যায় যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী রিক্রুটি ননরিক্রুটি নির্বিশেষে সকল মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গড়বার সিদ্ধান্ত। বরং প্রতিস্থাপিত হয় পাকিস্তান নামীয় নির্যাতক রাষ্ট্রের সকল আইন, একই চর্চ্চার উত্তরাধিকার সমরকাঠামো ও রাষ্ট্রকাঠামো সংশ্লিষ্ট শাসন প্রশাসন। সংগতকারণেই সাবেক রাষ্ট্রটির সকল সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিস্থাপিত হওয়ার মধ্য দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটে কাঠামোসংশ্লিষ্ট দুর্নীতি, লুটপাট, অত্যাচার, নিপীড়ন প্রভৃতি জনবিরুদ্ধ পথ-পদ্ধতি। যে পথ-পদ্ধতিকে ধারণ করতে গিয়ে খোদ রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানকে সাংবিধানিকভাবেই হতে হয় সর্বাত্মকভাবে একক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী।
যে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রাজনৈতিক দলটির ভেতরে জন্ম দেয় বিরুদ্ধমত দমনে কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠবার প্রবৃত্তি। যে সুযোগে দল ও শাসন প্রশাসনে জায়গা করে নেয় দুর্নীতি, লুটপাট, অনাচার, আর স্বেচ্ছাচার। যার কাছে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েন খোদ রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান। আর তাঁর এই অসহায়ত্বের প্রকাশ ঘটে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কখনো 'হুশিয়ারি', কখনোবা 'অনুরোধ' কখনো আদেশের সুরে। বিরক্ত, ক্ষুব্ধ ও অসহায় বঙ্গবন্ধুকে এমনটাও বলতে হয়,' দেশ স্বাধীন করলে সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পেয়েছি চোরের খনি। আমার ডানে চোর, বাঁয়ে চোর, সামনে চোর, পিছনে চোর, চোর আর চোর। আমি বিদেশ থেকে যা কিছু আনি এই চোর চাটার দল সব খাইয়া ফেলায়। সাত কোটি মানুষের জন্য সাড়ে সাত কোটি কম্বল আনছি, অথচ আমি আমারটাও পেলাম না।'
দুর্নীতি আর অনিয়মের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হুঁশিয়ারির সুরে এও বলেছিলেন, 'এখনো কিছু সংখ্যক লোক, এত রক্ত যাওয়ার পরেও যে সম্পদ আমি ভিক্ষা করে আনি, বাংলার গরীবকে দিয়ে পাঠাই, তার থেকে কিছু অংশ চুরি করে খায়। এদের জিহ্বা যে কত বড়, সে কথা কল্পনা করতে আমি শিহরিয়া উঠি। এই চোরের দল বাংলার মাটিতে খতম না হলে কিছুই করা যাবে না। আমি যা আনব এই চোরের দল খাইয়া শেষ করে দেবে। এই চোরের দলকে বাংলার মাটিতে শেষ করতে হবে। (সূত্র: ৩ জানুয়ারি, ১৯৭৩: বরগুনায় এক জনসভায় দেওয়া ভাষণ)।
সরকারি কর্মচারীদের আচরণ আর চর্চ্চাতেও ক্ষোভের অন্ত ছিল না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তাইতো আমরা দেখি, ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারিতে প্রথম পুলিশ সপ্তাহ ও বার্ষিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে, তাদের সেবা করুন। যাদের জন্য যাদের অর্থে আজকে আমরা চলছি, তাদের যাতে কষ্ট না হয়, তার দিকে খেয়াল রাখুন। যারা অন্যায় করবে, আপনারা অবশ্যই তাদের কঠোর হস্তে দমন করবেন। কিন্তু সাবধান, একটা নিরাপরাধ লোকের ওপরও যেন অত্যাচার না হয়। তাতে আল্লাহর আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠবে। আপনারা সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আপনারা যদি অত্যাচার করেন, শেষ পর্যন্ত আমাকেও আল্লাহর কাছে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে। কারণ, আমি আপনাদের জাতির পিতা, আমি আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, আমি আপনাদের নেতা। আমারও সেখানে দায়িত্ব রয়েছে।'
এমনকি পরীক্ষায় নকল সহ কিছু কিছু অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট বঙ্গবন্ধু নিজের লজ্জা ও আক্ষেপ প্রকাশ করছিলেন এভাবে:
'ছাত্র ভাইয়েরা, লেখাপড়া করেন। আপনাদের লজ্জা না হলেও আমার মাঝে মাঝে লজ্জা হয় যখন নকলের কথা শুনি। ডিগ্রি নিয়ে লাভ হবে না। ডিগ্রি নিয়ে মানুষ হওয়া যায় না। ডিগ্রি নিয়ে নিজের আত্মাকে ধোঁকা দেওয়া যায়। মানুষ হতে হলে লেখাপড়া করতে হবে। আমি খবর পাই বাপ-মা নকল নিয়া ছেলেদের-মেয়েদের এগিয়ে দিয়ে আসে। কত বড় জাতি। উহুঁ! জাতি কত নিচু হয়ে গেছে। (সূত্র: ১৮ মার্চ ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় দেওয়া ভাষন।)
'আমি দেখতে চাই যে, ছাত্রলীগের ছেলেরা যেন ফার্স্টক্লাস বেশী পায়। আমি দেখতে চাই, ছাত্রলীগের ছেলেরা যেন ওই যে কী কয়, নকল, ওই পরীক্ষা না দিয়া পাস করা, এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলো। (সূত্র: ১৯৭৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণ)।
এটা এখন প্রমাণিত সত্য যে, বঙ্গবন্ধুর এমন সব আক্ষেপ, ক্ষোভ, সংক্ষোভ,হুঁশিয়ারি কিছুই কানে নেয়নি সেসময়ের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রাজনৈতিক দল ওদলসংশ্লিষ্ট শাসন-প্রশাসনের লোকজন এবং দল কর্তৃক নানাভাবে ক্ষমতায়িত সুযোগ সন্ধানীরা।
বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা সময়ের ব্যবধান ত্রিশ বছরেরও বেশী। এখনো নিজ দল সম্পর্কে বাবার মতই নিজ দল ও দলের নেতাদের নিয়ে আক্ষেপ করতে দেখা যায় মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকতে তাকেও বলতে শোনা যায়, 'আওয়ামী লীগের সব নেতাকে কেনা যায়, এটাই সমস্যা। শেখ হাসিনা ছাড়া।'(সূত্র: প্রথম আলো অনলাইন, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪)।
শুধু কী দল নিয়ে, দল সমর্থিত সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়েও মাঝে মধ্যেই নানামাত্রার ক্ষোভ সংক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও। ছাত্রলীগ নিয়েও অনেক সময়ে ক্ষুব্ধ প্রকাশ জানিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। বলেছেন, 'অনিয়ম নানান রকম যেগুলো সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়, তাতে যখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন জড়িয়ে যায়, তখন সেটা সরকারের জন্য খুবই বিব্রতকর। আমরা তো আশাকরি, ছাত্রলীগের সদস্যরাই আগামী দিনের নেতা হবে, তারাই যদি অল্প বয়সে-তরুণ বয়সে কোনো অসৎ পথে যায় বা দুর্নীতিতে জড়ায়, সেটা তো খুবই একটা অশুভ সংকেত।' তিনি এও বলেছেন, 'আমার একার ইমেজ দিয়ে কি দেশ চলবে? সকলের সম্মিলিত ভাবমূর্তি দিয়ে দল এবং দেশ চালাতে হবে। কাজেই আমি কাউকে ছাড় দেবো না। ছাত্রলীগই হোক আর আওয়ামী লীগই হোক, কঠোর হস্তে এসব মোকাবেলা করা হবে।' (সূত্র: বিবিসি অনলাইন, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯)।
তবে জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ মূল দলসমর্থিত অন্য সংগঠনগুলোর মধ্যেও যে জনবিরুদ্ধ ও রাষ্ট্রবিরুদ্ধ কার্যক্রম নেই তা কিন্তু নয়। গণমাধ্যমে এগুলো তেমন একটা প্রচার পায় না বলেই হয়তো তা নিয়ে তেমন কোন ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া নেই শীর্ষ নেতৃত্বের। কিন্তু বাংলাদেশের হয়ে উঠবার প্রক্রিয়ায় ছাত্র রাজনীতির গুরুত্বটা যেহেতু সর্বজনস্বীকৃত ও অনেকটা নিয়ামক নির্ধারক তাই বোধকরি ছাত্র সংগঠনগুলোর অবস্থান এদেশের মানুষের কাছে অনেকই গুরুত্ব পায় বৈকি।
তাই ছাত্ররা যখন অনৈতিক কাজ করে, ছাত্রদের অবস্থান যখন দেশের জনমানুষের স্বার্থবিরুদ্ধ হয়, তখন সাধারণ মানুষ তাদের স্বার্থ রক্ষার সংগ্রামে অনেকটাই হয়ে পড়ে অভিভাবকহীন। সংগত কারণেই একটি রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রের পরিচালকগোষ্ঠী যখন হয়ে ওঠে জনস্বার্থবিরুদ্ধ তখন জনগণকে প্রতিবাদে সামিল করে ছাত্ররা। বিশ্বজুড়েই যারা কি না সকল অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন, জনস্বার্থবিরুদ্ধতার বিরুদ্ধের সংগ্রামে এগিয়ে থাকা সেনানী।
আর এই কারণেই স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই আমরা দেখছি সামরিক-বেসামরিক নির্বিশেষে রাষ্ট্র পরিচালকগোষ্ঠী সবথেকে আগে যে রাজনৈতিক প্রপঞ্চকে দুর্বৃত্তায়িত করে আসছে তা হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি।